পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
কলিকাতার ইতিহাস।

আছে, কিন্তু গৌড়ের নিদর্শনগুলি যেরূপ জাজ্বল্যমান বোধ হয়, আর কোন স্থানেরই নিদর্শন সেরূপ জাজ্বল্যমান নহে!” এই নগরে দশলক্ষাধিক লোকের বাস ছিল এবং কি আয়তন, কি অট্টালিকা, কি ঐশ্বর্য্যাড়ম্বর, সকল বিষয়েই ইহা বর্তমান কলিকাতা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ছিল। এই নগর সম্বন্ধে যে সকল অত্যদ্ভুত কিংবদন্তী প্রচলিত আছে, তন্মধ্যে এ*টীর নিদর্শন প্রদর্শনার্থ কথিত হইয়া থাকে যে, “ইহার অধিবাসীদিগকে পান যোগাইবার নিমিত্ত প্রতিদিন ত্রিশ হাজার পাণের দোকান খোলা হইত।” এই নগর লক্ষ্মণাবতী নামেও পরিচিত ছিল। আবুল ফজল কৃত এই নগরের বর্ণনার কিয়দংশ এস্থলে উদ্ধত হইলঃ—

 “জেনতাবাদ অতি প্রাচীন নগর। উহা এক সময়ে বঙ্গের রাজধানী ছিল। পূর্বে ইহা লক্ষ্মণাবতী নামে কখনও বা গৌড় নামে, অভিহিত হইত। মৃত সম্রাট হুমায়ুন ইহার বর্তমান নাম জেনতাবাদ প্রদান করেন। ......প্রাচীন গৌড়নগর যে সকল প্রদেশের রাজধানী ছিল, সেই সকল প্রদেশে গৌড়ীয় ভাষা কথিত হইত; উহাকে সাধারণতঃ বাঙ্গালা ভাষা বলে। কয়েকটি সীমান্ত প্রদেশ ভিন্ন বঙ্গের অন্যান্য সকল প্রদেশেই অদ্যাপি ঐ ভাষা প্রচলিত। ......যৎকালে মহম্মদ বখতিয়ার খিলিজি ১২০৩-০৪ খৃষ্টাব্দে বাঙ্গালা জয় করেন, তৎকালে তিনি সেই প্রাচীন গৌড়নগরকেই আপনার রাজধানী করিয়াছিনে। ......১৫৩৫ অব্দে যৎকালে সম্রাট হুমায়ুন, সের খাঁ(যিনি হুমায়ুনকে পরে হিন্দুস্থান হইতে দূরীভূত করিয়াছিলেন) নামক পাঠানের পশ্চাদনুসরণ করেন, সে সময়ে তিনি বঙ্গের তদানীন্তন রাজধানী গৌড় অধিকার করেন। ১৫৭৫ খৃষ্টাব্দে গৌড়ের নাম ক্কচিৎ দৃষ্ট হয়।”