পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
কলিকাতার ইতিহাস।

 কলিকাতা “প্রাসাদময়ী নগরী” আখ্যায় অভিহিত হইয়া থাকে। এই আখ্যা ইহা কত দিন হইতে উপভোগ করিয়া আসিতেছে তাহা বলা দুস্কর। কথিত তাছে যে, ইহার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে বিমুগ্ধ হইয়া জবচার্ণক এই স্থানটী মনোনীত করেন। ফোট উইলিয়ম ও এসপ্ল্যানেড এবং তাদের চতুম্পাবর্তী স্থান জঙ্গলাকীর্ণ ছিল। চাঁদপার ঘাট হইতে খিদিরপুর পর্যন্ত সমস্তটাই কেবল জঙ্গল ছিল। চৌরঙ্গির যে স্থানে অধুনা রম্য সৌধশ্রেণী দণ্ডায়মান, ১৭১৭ অব্দে উহা একটি অতি ক্ষুদ্র পল্লীগ্রাম ছিল; সেখানে ইতস্তঃত বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা গৃহ এবং তাহাদের চতুর্দিকে একটা জলাশয় ছিল। তৎকালে চৌরঙ্গি নগরের বহির্ভাগ বলিয়া পরিগণিত হইত। তথায় দস্যুতস্করের অত্যন্ত প্রাদুর্ভাব ছিল। রাত্রিকালে ভূত্যেরা ডাকাতের ভয়ে দলবদ্ধ হইয়া গমনা-গমন করিত। কলিকাতার সীমার বহির্ভাগে আশ্বারোহণে গমন করা সে সময়ে বড় বিপজ্জনক ব্যাপার ছিল। ফরাসী, পর্ত্তুগীজ, মগ, মার্হাট্টা, ইহারা সকলেই বিশিষ্ট ভীতির কারণ হইয়া উঠিয়াছিল। কথিত আছে যে, ১৭১৭ অব্দে মরো সুন্দর বন হইতে ১৭০০ লোক ধরিয়া লইয়া যায় এবং তাহাদিগকে ২০ হইতে ৭০ টাকা দরে আরাকানে চিরদাসরূপে বিক্রয় করে। এরূপ অনুমান করা হইয়া থাকে যে, বর্তমান আরাকানদিগের তিন চতুর্থ ভাগ সুন্দরবনবাসীদিগের সন্তান। ১৭৭০ অব্দ পর্যন্ত এই রূপ উৎপাত বিদ্যমান ছিল। উক্ত বৎসর, এই সক” মনুষ্যাপহারদিগের হস্ত হইতে কলিকাতার বন্দর রক্ষা করিবার নিমিত্ত শিবপুর রাজকীয় ঔদ্ভিদ উদ্যানের নিকটস্থ মুকুয়া থানা দুর্গের সন্নিধানে নদীর এপার হইতে ওপার পর্যন্ত একটি লৌহ-শৃঙ্খল প্রসারিত করা