পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কলিকাতা কল্পলতা

তাহা এই যে, তিনজন ইংলণ্ডীয় সৈন্য হুগলীর বাজার ভ্রমণার্থউঠিলে নবাবের সৈন্যেরা তাহাদিগকে গুরুতর প্রহারে আহত করে। তৎ শ্রবণমাত্র ক্রমে ক্রমে সমুদয় ইংরাজ সেনা তীরস্থ হইলে উভয় পক্ষের মধ্যে ঘোরতর সংগ্রাম উপস্থিত হয় এবং নিকলসন সাহেব জাহাজহইতে একাধারে গোলাবর্ষণ করিতে থাকেন; তাহাতে অন্যন ৫ শত গৃহ ধূলিসাৎ হইয়া যায়। তন্মধ্যে গুদাম সকলও বিধ্বংস হওয়াতে৩০ লক্ষ টাকা অপচয় হয়।

ইহা শ্রবণে নবাব কোম্পানীর পাটনা, ঢাকা ও কাশীমবাজারস্থ শাখা বাণিজ্যালয় সকল আক্রমণপূর্ব্বক ইংরাজদিগকে বাঙ্গালাদেশ হইতে নিষ্ক্রান্তকরণার্থ অশ্বারোহী ও পদাতিক সেনাসমূহ প্রেরণ করিলেন। হুগলী কুটির বড় সাহেব ইং ১৬৮৬ অব্দের ২০শে ডিসেম্বর দিবসে সুতালুটিতেপলায়নপূর্ব্বকপ্রাণরক্ষাকরেন। যেহেতু ঐ স্থানে তৎকালে শেঠবসাকেরা অধিবসিত করিতেন এবং তাঁহাদিগের সহিত সদ্ভাব থাকাতে বাণিজ্যকার্য্য স্থগিত হইবার সম্ভাবনা ছিলনা।ঐমাসের শেষেইংরাজদিগের সহিতসন্ধিকরিবার জন্য নবাব স্বীয় পক্ষ হইতে তিনজন দূত প্রেরণ করেন তাহাতে পূর্ব্ববৎ ক্ষমতা অনুসারে ইংরাজরা বাণিজ্য করিবার আজ্ঞাপ্রাপ্ত হন, কিন্তু এই সন্ধি করিবার পক্ষে নবাবের আন্তরিক অভিসন্ধি এই যে, কোনমতে কালহরণহইলে সহসা একদা ইংরাজদিগের উপর পড়িয়া তাহাদিগকে এককালীন এদেশ হইতে তাড়াইয়া দিবেন। অতএব ইং ১৬৮৭ অব্দের ফেব্রুয়ারী মাসের প্রারম্ভে হুগলীতে প্রচুর সৈন্য প্রেরণ করিলে চার্ণক সাহেব সুতালুটিতে আপনাকে নির্বিঘ্ননা বুঝিয়া সদলে সমভিব্যাহারে সাগরসঙ্গমে গিয়া হিজলি নামক এক অস্বাস্থ্যকর উপদ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন, এস্থানে বাস করিবার অব্যবহিত পরেই রোগোপদ্রবে অধিকাংশ ইংরাজ পরলোকগত হইলেন।

২০