পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়

এই সময় ইংরাজদিগের এরূপ দুর্গতি হইয়াছিল যে, তাহারা বাঙ্গালাদেশ পরিত্যাগ করিয়া যাইতে উদ্যত হইয়াছিলেন, কিন্তু সৌভাগ্যবশতঃ বিলাতীয় কর্তৃপক্ষ পাদশাহকে স্বকীয় বল বিজ্ঞাতকরণার্থ আপনাদিগের সুরাটস্থ বাণিজ্যালয় স্থগিত করিয়া উক্ত স্থানের নিকটকয়েকখানা রণতরীরাখাইয়া দিলেন।তথা হইতে যে সকল মুসলমানীয় তরণী মক্কাভিমুখে যাত্রী লইয়া যাইত, সেই সকল নাখোদা চালিত জাহাজের উপর উক্ত পোতাধ্যক্ষেরা মহা উৎপাত আরম্ভ করিলে পাশাহ অগত্যাইংরাজদিগের সহিত সন্ধি সংস্থাপন করিতে বাধ্য হইলেন।অতএব তাহার আজ্ঞানুসারে সায়েস্তা খাঁ পুনর্ব্বার চার্ণক সাহেবকে ডাকাইয়া স্বেচ্ছানুসারে বাঙ্গলাদেশের যে কোন স্থানে বাণিজ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিলেন, আরশতকরা ৩০ টাকা হারে যে শুল্কগ্রহণের রীতি ছিল, তাহাও রহিত হইল—ইংরাজেরা উলুবেড়িয়াতে আসিয়া বাণিজ্য করিতে লাগিলেন।

কিয়ৎকাল পরেই বিশ্বাসঘাতক নবাব পুনর্ব্বার তাঁহাদিগেরউপর দৌরাত্ম্য করাতে বিলাতীয় কর্তৃপক্ষকাপ্তেন হিথ সাহেবের অধীনে প্রচুরতর সামুদ্রিক সৈন্য প্রেরণ করিলেন, যদিও এই সময়ে ইংরাজদিগের সহিত নবাবের পুনর্ব্বার সৌহার্দ জননের সম্ভাবনা হইয়াছিল কিন্তু হিথ সাহেবের অব্যবস্থিতচিত্ততাবশতঃ তাহাসমূলে উচ্ছিন্ন হওয়ায় ইংরাজদিগের এরূপ দুর্দশা হইল যে তাহারা বাঙ্গালাদেশ পরিত্যাগপূর্ব্বক প্রস্থান করিতে বাধ্য হইলেন। তখন সমুদ্রপথে ইংরাজ রণপোতাধ্যক্ষগণ মুসলমানীয় জাহাজমাত্রের উপর অত্যাচার করিতে থাকিলে দিল্লীশ্বর অত্যন্ত জ্বালাতন হইয়া ১৬৮৯ অব্দে নবাবইব্রাহিম খাঁকেলিখিয়া পাঠাইলেন,ইংরাজদিগের

২১