পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অধ্যায়

স্ত্রীট হইতে ঐ দিঘির উত্তর ধার পর্যন্ত বিরাজমান ছিল। ইংলণ্ডাধিপতিতৃতীয় উইলিয়মের রাজত্বকালেঐদুর্গনির্মিত হওয়ায় ফোর্ট উইলিয়ম নামে তাহা প্রতিষ্ঠিত হয়—ঐ নামে নূতন দুর্গেরও নামকরণ হইয়াছে। প্রাচীন দুর্গ এরূপ সুদৃঢ়রূপে নির্মিত হয় যে ১৮১৯ অব্দে কাষ্টম হাউসের কারণ যখন তাহা ভাঙ্গিতে আরম্ভ হয় তখন কত কত গাঁতি ও সাবল চূর্ণ হইয়া যায় এবং পরিশেষে বারুদযোগে তাহা উড়াইয়া দিবার প্রয়োজন হইয়াছিল। সে সময়ে গুড়, পাট ও চূণসুরকিযোগে এরূপ এক সুকঠিন মশলা প্রস্তুত হইত যে তদ্বারা কোন বাটী গ্রথিত হইলে তাহা বজ্রবৎ দুর্ভেদ্য হইয়া যাইত। এই দুর্গরক্ষার্থ প্রথমে ২০০ মাত্র সৈন্য রক্ষিত হইয়াছিল। ইং ১৭০০ অব্দে কলিকাতা নগরের এরূপ সৌভাগ্যবৃদ্ধি হইল যে, অনেক ধনবান হিন্দু পরিবার আসিয়া তথায় বসতি করিতে লাগিলেন, কারণ সে সময়ে ইংরাজদিগের আশ্রয়ে বাস করিয়া লোক অধিক সুখী হইত; কোন প্রকার অত্যাচারের আশঙ্কা থাকিত না। কোম্পানী সুতালুটি, গোবিন্দপুর এবংকলিকাতা এই তিনখানি গ্রাম প্রাপ্ত হওয়ায় গঙ্গাতীরে প্রায় দেড় ক্রোশাধিক তাঁহাদের অধিকার বিস্তৃত হয়। কলিকাতার শ্রীবৃদ্ধি দেখিয়া হুগলীস্থ ফৌজদারের ঈর্ষানল প্রজ্বলিত হইয়া উঠিয়াছিল, সে জন্য তিনি নূতন নগরে একজন কাজী প্রেরণে উদ্যত হইলে ইংরাজেরা উপযুক্ত উৎকোচ প্রদানপূর্বক ফৌজদারের মুখ বন্ধ করিলেন। অনন্তর মুর্শিদকুলি খাঁর অধিকারকালে ইংরাজেরা পুনর্ব্বার প্রপীড়িত হইতে লাগিলেন। ঐ নবাব দেখিলেন যে বাঙ্গালাদেশের সৌভাগ্য বৃদ্ধির মূলীভূত কারণ ইউরোপীয় বিশেষতঃ ইংরাজদিগের বাণিজ্যকার্য্যের প্রচুরতা। সেজন্য তিনি মুসলমানদিগকে বাণিজ্য

২৭