পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় । ዓ¢ আক্রমণ করিল। “প্রতাপের মৃত্যু” এই শব, বঙ্গীয় সৈন্যগণের কর্ণকুহরে প্রবেশ করায়, তাহারা দশদিক অন্ধকার দেখিয়া, ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িল। মানসিংহ-সৈন্ত-পরিবেষ্টিত প্রতাপ, কোনরূপেই শক্ৰ-বুহি ভেদ করিতে সমর্থ হইলেন না । সমস্ত দিনের ভীষণ পরিশ্রম ও আহত স্থান হইতে প্রচুর শোণিতস্রাব হওয়াতে, পূৰ্ব্ব হইতেই প্রতাপের শরীর অবসন্ন প্রায়। এক্ষণে আবার শক্র-প্রহারে জর্জরিত হইয়া, যুদ্ধস্থলে তিনি অচৈতন্য হইয়া ভূপতিত হন। এই অবকাশে মানসিংহ, প্রতাপের পরিশ্রাস্ত সৈন্তগণকে বার-বিক্রমে আক্রমণ করেন। বঙ্গীয় সেনাগণ—প্রতাপাদিত্যের মূৰ্ছিত দেঙ্গ রক্ষা করিবার জন্ত, আচলের ন্যায় অটল হইয়া, তাহদের গতিরোধ করিতে লাগিল। ইহার পর মহারাজ প্রতাপাদিত্যের শরীররক্ষায় নিযুক্ত, একমাত্র অবশিষ্ট বীর-শঙ্করও, চতুৰ্দ্দিক হইতে আক্রাস্ত হইয়া সমর-ক্ষেত্রে মূচ্ছিত হইয় পড়েন। এই সময়ে মানসিংহ–স্বয়ং আগমন করিয়া, প্রতাপ ও শঙ্করকে বন্দী করিয়া নিজের শিবিরে লইয়া যান । মানসিংহ বিজয়োল্লাসে উৎসাহিত হইয়া, সৈন্যগণকে ধুমঘাট এবং যশোহর-নগর লুণ্ঠন করিতে অজ্ঞাপ্রদান করিলেন। এরূপ কিম্বদন্তী আছে, যে মানসিংহ যশোহর-বিজয়ে, অনেক বহুমূল্য দ্রব্যাদি পাইয়াছিলেন। প্রতাপাদিত্য-মহিষী, মহারাজের পরাজয় বাৰ্ত্তা শ্রবণে, শক্রহস্তে পতিত হইবার ভয়ে, যমুনাগর্ভে আত্ম-বিসর্জন করেন। মহারাণী যে স্থলে জল নিমজ্জিত হইয়াছিলেন—আজিও পথিকগণ সে স্থানটা অঙ্গুলী-নির্দেশে দেথষ্টয়া দিয়া থাকে। যশোর বিজয়াস্তে, মানসিংহ--বন্দী প্রতাপাদিত্য ও কচুরায় প্রভৃতিকে সঙ্গে লইয়া দিল্লী যাত্রা কুরেন। প্রতাপকে এইরূপ বন্দী অবস্থায়, ৰাদসাহের নিকট পৌছিতে হয় নাই। পথিমধ্যে—কাশীধামে প্রতাপাদিত্য ইহলীলা সম্বরণ করেন। তাহার দেহবসানের সঙ্গে সঙ্গে, যশোরের উজ্জল গৌরব জন্মের মত মলিন হইয়া পড়ে । প্রতাপের অন্তান্ত পরিজনবর্গ সম্বন্ধে, দুই চারিট কথা বলা প্রয়োজন। মানসিংহ-প্রতাপের আজীবন সহচর, বিশ্বস্ত ৰন্ধু, শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রতিজ্ঞা করাইয়। লন-—যে তিনি আর কখনও বাদসাহের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করিবেন না। শঙ্করও এই প্রতিজ্ঞাসুত্রে আবদ্ধ হইয়া, তাহার সমস্ত, সম্পত্তি ব্রাহ্মণগণকে দান করিয়া. স্বেচ্ছায় সৰ্ব্বস্বাস্ত হইয়া, গঙ্গাবাস উপলক্ষে বারাশত গ্রামে সপুত্র বসতি করেন। 桑 鼻 -