পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম অধ্যায় । ツQ(r কাশিমবাজারের বক্ষস্থিত কয়েকট সমাধিক্ষেত্রে, আজও সেকালের দিনেমার ও ওলন্দাজ বণিকদিগের অস্থিরাশি, বাঙ্গালার কোমল মৃত্তিকায় প্রোথিত বহিয়াছে। ইংরজিজাতি ভারতে বাণিজ্য করিতে না আসিলে, আজ আমরা। ব্রিটিশ-শাসনের মুখ, শান্তি, গৌরব ও সৌভাগ্য ভোগ করিতে পারিতাম না। আজ আমরা ভারতেশ্বরী মাতৃপ্রতিম মহারাণী ভিক্টােরিয়ার পৌত্র সম্রাট জর্জ ও সাম্রাজ্ঞী মেরীকে,এই কলিকাতা রাজধানীতে ভারত সম্রাটরূপে দেখিতে পাইতাম না । এই উচ্চশিক্ষা, অনাবিল সুখশান্তি, উচ্চরাজপদ, আর জগন্তব্যাপী নাম লইয়া, বঙ্গবাসী আজ সমগ্র ভারতের শীর্ষস্থানে দাড়াইতে পারিত না । ইষ্টইণ্ডিয়া কোম্পানী, কতকষ্ট সহা করিয়া, কত বাধা-বিপদ উত্তীর্ণ হইয়া, এদেশে বাণিজ্য আরম্ভ করিয়াছিলেন, বাণিজ্যের ফলে রাজাপ্রতিষ্ঠা করিয়া গিয়াছেন, তাহণ পরবর্তী পরিচ্ছেদ গুলিতেই পাঠক জানিতে পরিবেন। ইংরাজের এদেশে আসিবার পূর্বে, পট গীজগণ প্রথমে ভারতবর্ষে বাণিজ্যার্থে প্রবেশ করেন। ভারতের পশ্চিমোপকূলে র্তাহীদের উপনিবেশ স্থাপিত হয়। ১৪৯৮ খৃঃ অব্দের ২২এ মে, ভাঙ্গোডিগমা নামক একজন পটুগীজ নাবিক, উত্তমাশা অন্তরীপ ঘূরিয়া, প্রচণ্ড ঝড়ঝটিকা ও সমুদ্র-যাত্রার অসংখ্য বাধা বিঘ্ন সহা করিয়া, কলিকটে উপস্থিত হন। তখন কলিকটে জামেরিন বলিয়া একজন ক্ষমতাপন্ন রাজা ছিলেন। তাহীর দরবারে উপস্থিত হইয়া, পটুগীজেরা তাহদের একটু আশ্রয়স্থান করিয়া লইলেন। তৎপরে সাহস ও উদ্যম সহায়ে, এই পটু গীজগণ, মালাবার উপকূল হইতে পারস্যোপসাগরের তীর পর্য্যন্ত, প্রধান প্রধান বন্দর গুলিতে আধিপত্য বিস্তার করেন । একশত বৎসর মধ্যে, আরব উপসাগর হইতে আরম্ভ করিয়া, তাহারা আটলাণ্টিক মহাসাগর অতিক্রম করতঃ প্রাচীন জাপানের সন্ধান পর্য্যস্ত পাইয়াছিলেন। পটুগীজ বণিকগণ, ভারতের পশ্চিমকুলস্থ বন্দর গুলির সহিত বাণিজ্যে লিপ্ত হইয়া, প্রচুর ধন সঞ্চয় করিতে লাগিল। ভারতের ঐশ্বৰ্য্য-প্রবাদ ভারতীয় বাণিজ্য দ্রব্যাদির সহায়তায়, ইউরোপের নানাস্থানে প্রচারিত হইতে লাগিল। সমগ্র ইউরোপীয় জগত, স্তম্ভিতনেত্রে ভারত প্রত্যাগত এই পটুগীজ বণিকগণের ঐশ্বৰ্য্য ও উন্নতি দেখিয়া বিস্মিত হইল। ভারতের সহিত বাণিজ্যে, সহজে যে এত ধনশালী হওয়া যায়, ইহা দেখিয়া ইংরাজ, ফরাসী, দিনেমার প্রভৃতি জাতির, পটুগীজদের মত ভারতের সহিত বাণিজ্য করিবার জন্য লোলুপ হইয়া উঠিল ।