পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম অধ্যায় । ২১৩ পেকিনস বালেশ্বরের প্রধান এজেন্ট হইলেন। এই সময়ে কেনও কাশিমবাজারের প্রথম ফ্যাক্টার বা অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। চেম্বারলেন পাটনার রবস্থাপিত কুঠার কর্তৃত্ব লাভ করেন। আর কলিকাতা প্রতিষ্ঠাতা, জব চার্ণক, কাশিমবাজার কুঠীর চতুর্থ সহকারীরূপে নিযুক্ত হন। বিলাতের কৰ্ত্তারা, বাঙ্গলায় ইংরাজ বাণিজ্য-কুঠীর এইরূপ একটা সুব্যবস্থা করিয়া, অনেকটা নিশ্চিন্ত হইলেন। কিন্তু এই সময়ে, ভবিতব্যবশে ভারতেও এক মহা রাষ্ট্র-পরিবর্তন আরম্ভ হুইল । বঙ্গদেশেও সে পরিবর্তনের প্রবলশ্ৰোত পৌছিল। ১৬৫৭ খৃঃ অব্দের ৮ই সেপ্টেম্বর, সম্রাট সাহজাহান মুত্ৰকৃচ্ছ রোগে পীড়িত হন । র্তাহার পুত্ৰগণের মধ্যে সিংহাসন লইয়া ভীষণ বিবাদ উপস্থিত হইল। ঔরঙ্গজেবই সৰ্ব্বশেষে এই বিবাদে বিজয়লাভ করিয়া, দিল্লীর সিংহাসন অধিকার করেন। ১৬৫৮ খৃঃ অব্দের ২২ সে জুলাই ঔরঙ্গজেব "মালমৃগীর" উপাধি ধারণ করিয়া, দিল্লীর সিংহাসনে উপবিষ্ট হন। ইহার কয়েক মাস পরে, আরাকানে সম্রাটের অন্যতম পুত্র, ইংরাজ বণিকদের একমাত্র পৃষ্ঠপোষক, সাহমুজার শোচনীয় পরিণাম ঘটে এবং নূতন বাদসাহের আদেশে, সেনাপতি মীরজুমলা বঙ্গদেশের শাসন-ভারপ্রাপ্ত হন । স্থানীয় মোগল শাসনকৰ্ত্তারা, এই বিপ্লবের সুযোগে ইংরাজবণিকদিগকে নানারূপ অসঙ্গত দাবিদাওয়ায় ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিলেন। হুগলীর ফৌজদার বলিয়া পাঠাইলেন- “সম্রাট সাহজানের রাজ্যচুতির সহিত, আপনাদের পূৰ্ব্ব-গৃহীত সনন্দ ও নিশান সমুহের চলিত স্বত্ব লোপ পাইয়াছে। এক্ষণে আপনাদিগকে নূতনভাবে সরকারের সহিত বন্দোবস্ত করিতে হইবে। ইংরাজ কোম্পানীকে বাণিজ্য দ্রব্যের শুল্কাদি বাবত, বাৎসরিক তিন হাজার টাকা রাজস্ব দিতে হইবে।” এই সঙ্গে সঙ্গে বালেশ্বরের মোগল-শাসনকৰ্ত্তাও সমুদ্রোপকূলস্থ ইংরাজ জাহাজের উপর নঙ্গরী-মাণ্ডলের হার চড়াইয়া দিলেন। বঙ্গদেশের মধ্যে, ভাগীরথী বক্ষে তখন বোম্বেটিয়া দসু্যদের বড়ই উৎপাত। তাহারা প্রচুর বাণিজ্য-দ্ৰব্য-পূৰ্ণ কোন নৌকা দেখিলেই, সুবিধামত লুঠ করিয়া লইত। এই সমস্ত বিপত্তির উপর, আর এক নূতন বিপত্তি ঘটিল। পাটন। হইতে সোরা বোঝাই লইয়া, ইংরাজ কোম্পানীর যে সব নৌকা আসিতেছিল, স্বয়ং মীরজুমলা সাহেব, সে গুলিকে রাজমহলে আটক করিলেন। চারিদিক হইতেই, ইংরাজেরা এই সময়ে ব্যতিব্যস্ত ইয়া উঠিলেন। বাণিজ্যসুত্রে দেনা-পাওনার অনাদায়ী টাকার জন্ত,