পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম অধ্যায় । ২১৭ চরিতে আসিল । চারি পয়সার এত মাছ দিল, যে তাহাতে প্রায় দশ ননের খোরাক হয়। এইস্থানে নদীর মোহান দুই ভাগে বিভক্ত হইয়াছে। পূৰ্ব্বভাগে উল্লেখযোগ্য কিছুই নাই। মোহানার পশ্চিমে, হিজলী দুর্গ। এই ণে মোগল-সম্রাটের নিৰ্ম্মিত। হিজলীর নিকট বাদসাই লবণের কারখানা ছিল। সুন্দরবন হইতে সংগৃহীত মধুচক্রসমূহ হইতে, মোমও যথেষ্ট পরিমাণে প্রস্তুত হইত। এগুলি মোগল-সম্রাটের একচেটিয়া ব্যবসা । নদীর এই স্থানের নাম “রোগ স-রিভার’ ( Rogue's River ), ইত। আরাকানী বোম্বে টুয়াদের প্রধান আডিডা । সায়েস্তা খ" কর্তৃক আরাকানী জলদসু্যদের ধ্বংসসাধনের পূৰ্ব্বে, নদীর এই অংশ বিনা বিপদে অতিক্রম করা বড়ই দুরূহ ছিল । পরদিন মাষ্টারের ক্ষুদ্র তরণী বেতোড়ে উপস্থিত হয়। এই বেতোড় ইতেই, স্বরস্বতী নদীতে অতি পূরণকালে শত শত পটুগীজ জাহাজ বাণিজার্থে সপ্তগ্রামের বন্দরে যাইত । তখন ইহার দুই দিকেই মোগলের থান ছিল। এপারে বর্তমান মেটিয়াবুরুজ ও ওপারে কোম্পানীর বাগানের সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট সাহেবের অধুনাতন আবাসবাটার স্থান অধিকার করিয়া, মোগলের থানা বা তাহার অপভ্রংশ “থানা” নামক মৃত্যুর্গদ্বয় বৰ্ত্তমান ছিল । এই দুর্গ দুইটী বৰ্ত্তমান থাকায়, পটুগীজ ও মগ জলদসু্যরা ভাগিরথীর মধ্যে প্রবেশ করিতে পারিত না । ইহার পরেই ভাগিরথীর দক্ষিণকুলে জঙ্গলাবৃত গোবিন্দপুর গ্রাম । শেঠ ও বস্থকেরা এখানে বাস করায়, গোবিন্দপুরের জঙ্গল অনেকটা পরিস্কৃত হইয়া আসিতেছিল। গোবিন্দপুরের দক্ষিণে আদিগঙ্গা এবং আদিগঙ্গার উপকুলে কালীতীর্থ। গোবিন্দপুরের নিকটেই কলিকাতা । কিন্তু তখন তাহা গভীর জঙ্গল সমাকীর্ণ। মাষ্টার তাহার গন্তব্য-পথের অনেক স্থলেই “হলাওস” বা ডম্বদিগের সৌভাগ্য চিহ্নের পরিচয় পান। বরাহনগরে উপস্থিত হইয়া, তিনি উচুদিগের শূকরের কারখানা দেখিতে পান। এইস্থানে বড় বড় শূকর বধ করা হইত এবং লবণ-জারিত করিয়া তাহা ইউরোপে বিক্রয়ার্থে প্রেরিত ইত।* চন্দননগরেও তিনি ডচ দিগের একটা সুন্দর উদ্যানবাটী দেখিতে পান। ইহার পরেই ফরাসীদিগের ধ্বংশ প্রায় ফ্যাক্টরী, তাহার নেত্রপথে পতিত হয়। so

  • অনেকে বলেন-বরানগরের চারিদিকে শূকরের বা বরাহের উৎপাত ছিল বলিয়া, "বরাহনগর” আখ্যালাভ করিয়াছে। শূকরঘটিত এ কিম্বদন্ত্রী যে একেবারেই অমূলক " তাহ মাষ্টারের লিখিত কাহিনী হইতেই প্রকাশ । আমাদের বোধ হয়, বরাহনগরে

ՀԵ