পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NDo o কলিকাতা সেকালের ও একালের কয়েকখানি নদীনে ডুবিয়া গিয়াছে, দুই চারিখানি তীরভূমিতে আড় হুইল পড়িয়া আছে—অপরগুলি খণ্ড বিথও হইয়া গিয়াছে। কি ভয়ানক দৃত । ইংরাজের ও দেশীয়দের আবাস বাটীর মধ্যে, দশবার খানি একাধারে ভূমিসাৎ হইয়াছে। সেন্ট এন্‌ গির্জার, চুড়া ভাঙ্গিয়া, গির্জাটা মাটিতে সমভূমি হইয়াছে । তখনকার অবস্থা দেখিয়া বোধ হইল—যেন কোন প্রবল শক্ৰ আসিয়া, তাহ সমভূমি করিয়া গিয়াছে। এই ঝড়ের দ্বারা এত ভয়ানক ক্ষতি হইয়াছিল, যে লেখনীমুখে তাহার স্বরূপ বর্ণনা অসম্ভব। রাস্তার দুই ধারে যে সমস্ত বৃক্ষ রোপিত হইয়াছিল, তাহ রাস্ত জুড়িয়া পড়িয়া আছে।” রসেলের লিখিত কাহিনী হইতেই প্রকাশ—এই ঝড় ও ০ এ সেপ্টেম্বর আরম্ভ হয়। বঙ্গোপসাগর হইতেই ঝড়টা উঠিতে আরম্ভ করে। যেমন ঝড়ের বেগ, তেমনই মুষলধারে বৃষ্টি । পাচ ঘণ্টার মধ্যে নদীর জল-১৫ ইঞ্চি বাড়িয়া উঠে। ঝড়ট সমুদ্র হইতে উঠিয়া ৬০ লিগ পৰ্য্যন্ত দূরবর্তী স্থানে প্রধাবিত হয় । ইহার সঙ্গে, আবার ভূমিকম্পও ছিল। প্রায় বিশহাজার জাহাজ, বোট, জেলেডিঙ্গী, নৌকা, ভড়, বজরা ইত্যাদি - নষ্ট হইয়াছিল, এবং ভাঙ্গিয়া বা ডুবিয়া গিয়াছিল। গো, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, ইত্যাদি অনেক গৃহপালিত পশু, এই বন্যার মধ্যে ডুবিয়া যায়। এমন কি—কলিকাতার জঙ্গলমধ্যবাসী কয়েকটা বাঘ ও গণ্ডারকে পর দিন নদী স্রোতে মৃত্যবস্থার ভাসিতে দেখা যায়। পক্ষীকুলের দুর্দশায় ইয়ত্তা ছিল না। বহুসংখ্যক পক্ষীর মৃতদেহ, নদী জলে ও পথিমধ্যে পরিদৃষ্ট হইয়াছিল। ৫০০ টন মাল বহিতে পারে, এমন অনেক জাহাজ দুইশত হাত দূরবর্তী গ্রামের মধ্যে সবেগে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল। ডেকার, ডিভনশায়ার, নিউকাসেল প্রভৃতি তিন খানি বড় বড় জাহাজ, নদীর তটভূমিতে ঝটিকা বেগে নিক্ষিপ্ত হইয়া, চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া গিয়াছিল। পেলহাম নামক জাহাজ খানির কোন সন্ধানই পাওয়া যায় নাই । ফরাসীদের একখানা জাহাজ পূৰ্ব্বদিন রাত্রে বন্দরে আসিয়া লাগে—তাহাও চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া গিয়াছিল। ঝড় থামিবার পর, নদীগর্ভে নিমজ্জিত অনেক মালপত্র পুনরুদ্ধার করা হয়। একখানি জাহাজের অধিকাংশই জল মধ্যে নিমজ্জিত হইয়াছিল । তাহার মালগুলি উদ্ধারের জন্ত, একজন লোককে নীচের ডেকে নামাইয়া দেওয়া হইল। কিন্তু , সে আর ডেক হইতে বহির হইয়া উপরে আসিল না। কোনরূপ দুর্ঘটনা ঘটিয়াছে ভাবিয়া, আর একজন লোক সেই ডেকের মধ্যে নামিয়া গেল। তাহারও সেই অবস্থা । তখন মশাল লইয়া, জনকণে