পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৪৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ꮌ8 কলিকতা সেকালের ও একালের । পাষ্টত। বৃন্দাবন, ফকীরের এই দুষ্ট ব্যবহারে বিরক্ত হইয়া, সেই প্রাচীরের কতকগুলি ইষ্টক ফেলিয়া দেন এবং ফকীরকে গালি দিয়া বহিস্কৃত করেন। ফকার, নবাবের নিকট বিচারপ্রার্থী হইলে, কাজী মোহম্মদ সরেফ মুসলমান-শাস্ত্রের বিধানাহসারে তালুকদারের প্রাণদণ্ডের বিধান দেন । মুরশীদকুলী খাঁ বৃন্দাবনকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করিতে অসন্মত হইয়া, ইসলাম শাস্ত্রে তাহাকে মুক্তি দিবার কোনরূপ ব্যবস্থা আছে কি না, তৎসম্বন্ধে কাজীকে প্রশ্ন করেন। তাহাতে কাজীসাহেব বলেন—“শাস্ত্রে এরূপ অপরাধীকে মার্জনা করিবার কোন বিধানই নাই । তবে অপরাধীর সহকারীকে বধ করিতে যে সময় টুকু অবিশ্বক, তাহার জন্য প্রধান অপরাধীকে ৰ্বাচিবার সময় দেওয়া যাইতে পারে। তৎপরে তাগকে নিশ্চয়ই প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করিতে হইবে।” সাহজাদা আজিমওশ্বান এই হিন্দু-তালুকদারের জীবন-রক্ষার জন্য অন্তরোধ করিলেও, তাহাতে কোনরূপ ফল হয় নাই। কাজিসাহেব, স্বহস্তে তার-নিক্ষেপ করিয়া, বৃন্দাবনের জীবননাশ করেন। আজিমওশ্বান এই ব্যাপারে বিরক্ত হইয়া, সম্রাটকে জানান—“আপনার প্রেরিত কাজী মোহম্মদ সরেফ, উন্মাদ হইয়াছেন । কারণ তিনি অনর্থক হিন্দু-তালুকদার বৃন্দাবনকে বধ করিয়াছেন।” কিন্তু গোড় মুসলমান সম্রাট ঔরঙ্গজেব, সেই পত্রপৃষ্ঠে স্বহস্তে লিখিয়া দেন—“কাজী সরফ, থোদাক তরফ” অর্থাৎ কাজিসাহেব ঈশ্বরাহুমোদিত কার্যই করিয়াছেন।” এই বিচার-ব্যাপার হইতে বুঝা যায়, মুরশীদকুলী খাঁ বৃন্দাবনের জীবন-রক্ষার জন্য চেষ্টা করিয়াও বিফল মনোরথ হন । তাহার আর একটা বিচার-প্রণালীর কথা বলিব । হুগলীর ফৌজদার আসাদউল্লা খা, নবাবের অতি প্রিয়পাত্র ছিলেন । র্তাহার সময়ে হুগলী বন্দরের কোতোয়াল—এনাম উদ্দিন, এক সন্ত্রান্ত মোগল কন্যাকে গৃহ হইতে বাহির করিয়া লইয়া যায়। আসাদউল্লার নিকট, কন্যার পিতা ইমাম উদিনের বিরুদ্ধে নালিশ রুজু করিলে, তিনি তাহাকে বলেন,—“ভবিষ্যতে ইমাম উদ্দিন আর কোনরূপ দুৰ্ব্বব্যহার কপ্লিবে না।” কিন্তু সেই অপহৃত কন্যার পিতা, ইহাতে সন্তুষ্ট না হইয়া, নবাব মুৱশদকুলী বার নিকট এক আরজী উপস্থিত করেন। আবেদনকারীর অভিযোগ সত্য, এ কথা প্রমাণ হইলে নবাব আদেশ প্রচার করেন, কোরাপ্রেত্ন” নিৰ্দ্ধেশ্রায়ুসারে প্রস্তুরনিক্ষেপে এই ব্রাভিচারীকে হত্য করা হইবে। হুগলীর ফৌজদার সাহেব এ বিষয়ে নবাবকে অনুরোধ করিলেও তিনি তাহ রক্ষা করেন নাই।