পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চদশ অধ্যায় । ৪৩৭ জমীদার বিদ্রোহী হইল, কোথায় কোন ডাকাতের দল প্রজার, সৰ্ব্বস্ব। লুণ্ঠন করিয়াছে, এ সকল সংবাদ তাহার নবাবকে লিখিয়া পাঠাইতেন। নবাব তাহ বাদসাহের নিকট পাঠাইতেন। বেকায়া-মৰীম্‌ বলিয়া আর এক শ্রেণীর কৰ্ম্মচারী ছিলেন। তাহারা কেবল দরবারের ও স্থানীয় ঘটনাসমূহ লিপিবদ্ধ করিতেন। প্রধান প্রধান সহরের ও নগরের সওয়ানেনেগারগণের সহিত ইহঁাদের সংবাদ আদান-প্রদান চলিত। “কানুনগো" পদ, পুরাকালের নবাবী-আমল হইতে, এই ইংরাজ রাজত্বের স্বর্ণময় যুগে আজও বৰ্ত্তমান। তবে সেকালের কানুনগোর শক্তি-সামর্থ্য ও পদগৌরবের তুলনায়, আধুনিক কানুনগো কিছুই নহেন। আকবর বাদসাহের আমলে, রাজা টোডরমল যখন বঙ্গের রাজস্ব-ব্যবস্থা করেন, তখন কামুনগো-পদের প্রথম স্বষ্টি হয়। টােডরমল, সমগ্র বঙ্গে দশজন কানুনগো নিযুক্ত করেন। কানুনগোগণ জমীর উৎপাদিক্কা শক্তি, পরিমাণ, রাজস্ব প্রভৃতি সম্বন্ধে যে সমস্ত কাগজ-পত্র প্রস্তুত করিয়া দিয়াছিলেন, তাহ হইতেই বাঙ্গালার রাজস্ব-বন্দোবস্ত হয়। একজন প্রধান কান্থনগোর উপর সর্বময় কর্তৃত্ব অর্পিত হয়। ইনিই সমগ্র বঙ্গদেশের রাজস্ব-সংগ্ৰহ বিভাগের একমাত্র মালিক। মুবাদার ও নবাবগণ এই বিষয়ে কামুনগোয় মুখাপেক্ষী ছিলেন। প্রধান কানুনগো, দেশাধিকারী বলিয়া উরিৰিও হইতেন। সমগ্র বঙ্গের রাজশ্বের জমাবন্দী, তাহার দ্বারাই নিৰ্ধারিত হইত। প্রধান কানুনগো, সদর রাজস্বের উপর শতকরা আট আনা রুকুম পাইতেন। ঔরঙ্গজেবের কুটনীতি কৌশলে, কানুনগোর এই অসীম ক্ষমতা অনেকটা হ্রাস হয়। কারণ র্তাহার আমলে—দ্বিতীয় কামুনগো প্রদের স্বষ্টি হয়। নবাব মুরশীদকুলী খার আমলে-দর্পনারায়ণ প্রধান কামুনগো ছিলেন। জয়নারায়ণ দ্বিতীয় কানুনগোর পদে নিযুক্ত হন। কামুনগোরু শক্তি ও ক্ষমতা কিরূপ ছিল, তাহার একটা উদাহরণ দিই। মুরশীদাবাদে রাজধানী প্রতিষ্ঠার পর, বর্ষশেষে সরকারী হিসাবপত্র প্রস্তুত হইল। এই হিসাব, সম্রাট সকাশে দাখিল করিতে হইবে। নবাব মুর্শদকুলী খাঁ, বাঙ্গালার রাজস্ব যথেষ্ট বৃদ্ধি করিয়াছেন—ত্তাহ এই সমস্ত কাগজ-পত্ৰ वृष्टे জানিতে পারিলে, বাদসহ তাহার উপর বড়ই সন্তুষ্ট হইবেন । কিন্তু প্রথামঞ্জ কাগজপত্র দরবারে পেশু করিৰার পূর্বে, তাহাতে নবারের নিজের সন্থী ও প্রধান কামনগো ও তাছার সহকারীর সহী থাকা প্রয়োজন। তাহান। হইলে, এই রাজস্ব-কাগজাত সরকারে, অগ্রস্থ হইবে। তখন দর্শনারায়।