পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

se কলিকাতা সেকালের ও একালের। । উত্তর ও করতোয়ার পশ্চিম, এবং মহানন্দার পূর্বাংশকে বরেন্দ্র, আর করতোয় ও পদ্মার পূর্ব-পার্শ্বস্থ প্রদেশকে বঙ্গ বলিত। বল্লালী আমলের এই বুগড়ী প্রদেশই আজকালকার প্রেসিডেন্সি-বিভাগ। বল্লালসেন এই বগড়া অঞ্চলের কিয়দংশ ভূমি, দেবসেবার, জন্য এক ব্রাহ্মণকে প্রদান করেন। ইহার পর হইতে পঞ্চদশ শতাব্দী পৰ্য্যস্ত, কালীঘাটের আর কোন উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায় না। - কালীক্ষেত্রদীপিকা হইতে জানিতে পারা যায়—“পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে, দিল্লীর পাঠান রাজগণের সময়ে—কালীঘাটের অনতিদূরে, স্থানে স্থানে মনুষ্যের বাস হইয়াছিল। এ সময় কালীঘাটের চতুঃপার্শ্ব—বেত্র, কচুই প্রভৃতি লতা এবং দুচ্ছেদ্য গুল্মাদিময় ভীষণ জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। বৰ্ত্তমান কালীবাটির পূর্বদিকে, ঐ বনের মধ্য দিয়া এক অপ্রশস্ত পথ ছিল। এই পথ, বর্তমান কালের “রসারোড" বলিয়া সাধারণের নিকট পরিচিত। বন-মধ্যস্থ এই অপ্রশস্ত পথ দিয়া, কালী-দর্শনার্থী নাগা ফকির ও সন্ন্যাসীগণ, দলবদ্ধভাবে যাতায়াত করিত এবং কালীঘাটের কার্য্য শেষ করিয়া, পদব্রজে গঙ্গাসাগরে “কপিলাশ্রমে” পৌছিত। কালীঘাটের দক্ষিণ প্রদেশে--সাগর সন্নিকটে, ছত্রভোগে, অম্বুলিঙ্গশিব ও সংকেতমাধব বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত ছিল। চৈতন্য-ভাগবতেও এই দুই দেবস্থানের নামোল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। কলিকাতা হইতে পশ্চিমাভিমুখে ধাবিতা যে প্রশস্ত নদী,এখন সমুদ্র গমনের প্রধান পথ হইয়াছে, তখন তাহ এত প্রশস্ত ছিল না। এই সংকীর্ণ নদী দিয়া, সেই পুরাকালে লোকে তমলুক, হিজলী, উৎকল প্রভৃতি স্থানে নৌকাযোগে যাতায়াত করিত। বর্তমান কালীঘাটের সন্নিকটে, ভাগিরথী ক্রমশঃ ধনুকাকারে বক্র হইয়া, উত্তর-বাহিনী ছিলেন। বর্তমান কালীকুও-হ্রদ, তুখন গঙ্গাগর্তে অতলস্পর্শ “দহ” বা 'দ” ছিল । * পীঠস্থান বলিয়া পরিচিত হইবার বহুকাল পরেও-কালীঘাট নির্জন

  • নকুলেশ্বরের মন্দির হইতে আরম্ভ হইয়া, একটী রাস্ত আজকাল কালীদেবীর মন্দিরের পশ্চাতের দ্বার পর্য্যন্ত গিয়া, ভোগের ঘরের নিকট শেষ হইয়াছে। ভোগের—ঘরের পশ্চাতে এই রাস্তীরধারে যে পঙ্কিল পুকুরটা দেখিতে পাওয়া যায়—তাহাই পুর কালের “কালীকুগু" । এই কালীকুণ্ডের সহিত পূর্বে গঙ্গার সংযোগ ছিল—অথবা ভাগিরথী-শ্রোত এই কালীকুও পর্যান্ত প্রধাবিত হইত। চারি পাচশত বৎসরের মধ্যে কি ভয়ানক পরিবর্তনই হইয়াছে । পাঠক ! একবার ভাবিয়া দেখিবেন—অতীত কালের গঙ্গাগৰ্ভস্থ কালীকুও—তীয় হইতে বর্তমানের আদিগঙ্গা কতদূরে সরিয়া আসিয়াছেন। • জনপ্রবাদ এই, কাণীকুণ্ড তীৱেই সতীর প্রস্তরবণুপদাঙ্গুলী পাওয়া যায়। পরে এ সম্বন্ধে অন্যান্য কথা বল হইবে।