পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৬০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tፃ8 কলিকতা সেকালের ও একালের । আসিয়াছিল। ইহার দুই সপ্তাহ পরে কোম্পানীর ক্ষতিপূরণের জন্য আরও চল্লিশ লক্ষ টাকা কলিকাতায় পৌছায়। এতকাল কোম্পানী নবী টাকশাল হইতে টাকা তৈয়ার করাইয়া লইতেন। মীরজাফরের সহিত সন্ধির ফলে, ইংরাজের কলিকাতার টাকশাল স্থাপন ও তাঁহাতে নিজেদের সূত্র অঙ্কন করিবার স্বত্ব লাভ করেন। ১৭৫৭ সালের ২৯শে আগষ্ট তারিখে— কোম্পানী বাহাদুর নিজের টাকশালে সৰ্ব্বপ্রথম টাকা তৈয়ারি করেন। অবশ্য এই সমস্ত টাকা দিল্লীর বাদসাহের নামযুক্ত হইয়া অঙ্কিত হইত। তাহাতে উর্দু-ফারসী ভাষায় সব কথা লেখা থাকিত। ইংলণ্ডের সম্রাট চতুর্থ উইলয়মের সময় হইতে ইংরাজ-কোম্পানী ইংলণ্ডাধিপের মুক্তি সম্বলিত, মুদ্রার প্রথম প্রচলন করেন। এ মুদ্রা এখনও অনেকস্থলে দেখিতে পাওয়া যায় । লর্ড ক্লাইভ ও ওয়াটসন—নবাব কর্তৃক কলিকাতা লুণ্ঠনের সাত মাস পরে তাহা পুনরধিকার করেন। এই সময়ে কলিকাতার অবস্থা বর্ণনা করিয়া একজন সুপ্রসিদ্ধ ইংরাজলেখক লিখিয়াছেন—“ক্লাইভ ও ওয়াটসন আসিয়া দেখিলেন, কলিকাতার অবস্থা অতি শোচনীয়–অনেক বড় বড় বাড়ী ভগ্নস্তুপে পরিণত। সাহেব-পল্লীর অনেকগুলি বাড়ী অগ্নিবিদগ্ধ হইয়া অজারভস্মে পরিণত। সেণ্ট এন্‌ গির্জা ধ্বংশপ্রায় অবস্থায় উপনীত । গির্জারমধ্যে, আৰ্শ্বিনী ও পটুগীজদের গির্জা, অপেক্ষাকৃত ভাল অবস্থায় ছিল। নাগরিকগণের বহুমূল্য সম্পত্তি যাহা কিছু ছিল, তাহার অধিকাংশই তাহার কলিকাতা ছাড়িয়া পলায়নের সময় সঙ্গে লইয়া গিয়াছে—কিম্বা প্তাহীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি, নবাবসৈন্ত কর্তৃক লুষ্ঠিত হইয়াছে। সহরের ইউরোপীয় অংশের অবস্থাই এইরূপ। দেশীয়—বিভাগের অবস্থা আরও শোচনীয়। সমগ্র বড়বাজার অগ্নিদ্বারা ভস্মীভূত। অনেক ঘর বাড়ী মৃত পড়িয়া আছে—তাহাতে লোকজন নাই। কলিকাতার ছর্গের মধ্যস্বলে, মুসলমানের একটা মসজিদ নিৰ্মাণ করিয়া রাখিয়াছে। এই মসজিদের অবস্থান স্থান সঙ্কলনের জন্ত তাহারা পার্শ্ববৰ্ত্তী কয়েকটা বাড়ী ভাঙ্গিয়া তাহার ইট-কাঠ লুঠিয়া লইয়াছে। অর্থলোলুপ মাণিকচাদকে, নবাব সিরাজ- , উদৌল। কলিকাতার সর্বময় কৰ্ত্তা করিয়া দিয়া গিয়াছিলেন । নবাবের প্রথম আক্রমণ সময়ে, প্রায় পঞ্চাশ হাজার অধিবাসী প্রাণভয়ে কলিকাতা ছাড়িয়া পলাইয়াছিল। মাণিকচাদের উৎপীড়ন ভয়ে, তাহার কলিকাতায় শক্তি স্থাপিত হইলেও ফিরিয়া আসিতে সাহস করে নাই। আশ্চর্য্যের বিষয়