পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Öğe কলিকাতা সেকালের ও একালের । প্রতাপ যথোচিত সন্মানের সহিত বলবস্তকে গ্রহণ করিয়া, ঈশাখার কুশলাদি সম্বন্ধে নানাবিধ প্রশ্ন করিলেন। বলবস্তও যথাযথ উত্তরাদি প্রদানে তাহাকে সস্তুষ্ট করিয়া বলিলেন –“মহারাজ ! আপনাকে গোপনে কিছু বলিতে চাই—এজন্য এক নির্জন স্থানে চলুন।" প্রতাপ কোনরূপ সন্দেহ না করিয়া, বলবস্তকে এক নির্জন কক্ষে লইয়া গেলেন । রাজ্যসম্বন্ধে নানাবিধ কথোপকথনে প্রতাপকে অন্যমনস্ক করিয়া, বলবন্ত সহসা ক্ষিপ্তবাস্ত্রবৎ, প্রতাপের উপর বর্ণপাইয়া পড়িয় তাহাকে ভূপতিত করিল ! ভীষণস্বরে বলবন্ত বলিল,—“মহারাজ ! আপনি এখন সম্পূর্ণরূপে আমার আয়ত্তধীন। যদি আপনি আমার প্রস্তাবে স্বীকৃত হন, তাহা হইলে আমি আপনাকে অব্যাহতি দিব। নচেৎ এই শাণিতাগ্রভাগ তরবারি, আপনার উত্তপ্ত রুধির পান করিবে । আমি জানি—আপনি সত্যবাদী। এজন্য প্রতিজ্ঞ করুন, বিন আপত্তিতে রাজকুমার রাঘবকে আমার সঙ্গে যাইতে দিবেন। যতক্ষণ না আমি আপনার রাজ্যের বাহিরে যাই, ততক্ষণ আমায় কোনরূপ বাধা দিবেন না ।” প্রতাপ যখন দেখিলেন, বলবস্তের হস্তে র্তাহার নিস্তার নাই—তখন অগত্য তিনি তাহার প্রস্তাবে সন্মত হইলেন। প্রতাপের কথা নড়িবার নয়। বলবন্ত এই অদ্ভুত কৌশলে—বিনাযুদ্ধে, বিনা রক্তপাতে, শিশু, রাজ-কুমার রাঘবকে লইয়া ইশার্থীর হস্তে সমর্পণ করিলেন । ইশার্থী—বলবন্ত প্রমুখাৎ সমস্ত কথা অবগত হইয়া,ৰ্তাহার বীরত্বের যথেষ্ট প্রশংসা করিয়া বলিলেন, “বলবন্ত ! মনে করিও না—প্রতাপাদিত্য তোমাকর্তৃক এইভাবে লাঞ্ছিত হইয়া, কোনরূপ প্রতিশোধ লইবার চেষ্টা করিবে না। শীঘ্রই সে আমাদের রাজ্য-আক্রমণ করিতে পারে, অতএব, এ সম্বন্ধে পূর্ব হইতেই আমাদের প্রস্তুত থাকা উচিত।” ইশাখার অনুমানই সত্য হইল। নির্জিত প্রতাপ, মহাকুদ্ধ হইয়া স্থলপথেও জলপথে বিপুল-বাহিনী লইয়া, ইশাখার আশ্রয়দুর্গ হিজলী আক্রমণ করিলেন। তিনিও তাহার নৌ-সেনাধ্যক্ষ রড, হিজলীর উপর ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করিয়া হিজলীবাসীদের ভীত ও সয়ন্ত করিয়া তুলিলেন। শঙ্কর প্রভৃতি সেনানায়ক-গণ, চারিদিক হইতে স্থলপথে ও জলপথে যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন। এই যুদ্ধে শত্রুপক্ষ নিক্ষিপ্ত-গোলার আঘাতে, ইশ+মছলী পঞ্চস্থ প্রাপ্ত হন। বলবন্তও অসীম সাহসের সহিত যুদ্ধ করিয়া, ८भंशग्नक्र করিতে অসমর্থ হইয়া, শক্র হস্তে প্রাণ-বিসর্জন করেন।