পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やぶ)● কল্পদ্রুম | জাজ্বল্যমান দেবতা ! তোমার দয়ায় লোকে স্বৰ্গ-সুখভোগ এবং তোমার করুণা বিহনে লোকে নরকযন্ত্রণা ভোগ করে। তোমার ক্ষমতা অসীম। তুমি ভ্রাতায় ভ্রাতায় বিবাদ ও মুখ দেখাদেখি বন্ধ করিয়া দিতে পার। তোমার কুহকে পড়ে একজন প্রবঞ্চনা করিয়া অপরের বিষয় লইতেও ছাড়ে না। তোমার গুণে ভাগুর ভাদ্রবধূকে বিষ দানে প্রাণে মারিতেছে। তোমার মহিমায় অনেকে খুড়ি জেটকেও বেশ্যাপবাদ দিতে ছাড়িতেছে না। তোমার গুণে পুত্র পিতৃবধ পাপে নিমগ্ন হইয়া সিংহাসন লইতেও পেচ পাও নহে। তোমার গুণে আপন পর ও পর আপন, সাধু অসাধু, এবং অসাধু সাধু হয় । তোমার কৃপায় দোষী নির্দোষ এবং নির্দোষও দোষী হইয়া সাজা পাইয় থাকে। তোমাকে পাইবারজন্য লোকে জলে অনলে সমরক্ষেত্রে এবং ব্যাস্ত্র ভরকের মুখে যাইতেও ভীত নহে। তোমাকে পাবার আশে অনেকে জাত্যন্তর ও ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণ করিয়া পিতা মাতাকেও কাদাইয়। থাকেন। তোমাকে পাইবার জন্য পিতামাতা পুত্র কন্যাকেও বিক্রয় করিতেছেন। তুমি বৃক্ষ লতা ফল মূল সকলেরই মধ্যে আছ, যেহেতু সেই সমস্ত বিনিময়ে তোমাকে পাওয়া যায়। তুমি ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন নামে পূজা ও আদর পাইয়া থাক। তোমাকে না চিনে এমন লোক জগতে নাই। তোমার কৃপায় নীচ উচ্চ এবং কৃপাবিহনে উচ্চকে ও নীচ হইতে দেখা যায়। তোমার গুণ অসীম, যেহেতু তোমাকে লাভ করিবার জন্য পুরুষ স্ত্রী-হত্য এবং স্ত্রী পুরুষ-হত্যা পাপেও ভীত নহে। তোমাকে লাভ করিবার জন্য ব্রাহ্মণেও ম্লেচ্ছ পাদুকাথাৎ পৃষ্ঠ-দেশে নিরবে সহ্য করিতেছে । হে ! রজতময়, কাঞ্চনময়, কাগজময়, টাকা, মোহর, নোট, আমি তোমাদিগকে শত শত প্রণাম করি, একবার রূপ দৃষ্টিতে চাও। মাগো ! এ দীনহীন সন্তান তোমার করুণ বিহনে বড় মন-কষ্টে দিন যাপন করিতেছে । আমার প্রতি একবার প্রসন্ন হও । দেবী ! আমার আসা উচ্চ নহে । আমি এই মাত্র ভিক্ষা করি, ষে কোন আকারে ৬০ সংখ্যা মাত্র মাস মাস আমার হস্তে পদ ধূলি দিতে আসিও। তাহা হইলেই আমি যজ্ঞবাড়ীতে গিয়া পাতে মাছের তরকারী থাইয়া মনুষ্য জীবন সার্থক করিয়া আসিব । টঙ্কেণ তুমি শ্বেতাঙ্গ, এজন্য শ্বেতাঙ্গের ঘরে বেশী যাতায়াত কর তাহাতে আমার দুঃখ নাই। এ দুর্ভাগ বাঙ্গালী ৬০ সংখ্যা মাত্র আকাঙ্খা করে। কারণ ইহার যজ্ঞ বাড়ীতে মাছের তরকারী খাইতে বড় সাধ হইয়াছে।