পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪১৬ । কল্পদ্রুম | অসুবিধার প্রতিবিধানের উপায় কি ? এরূপ বিনিময় দ্রব্য হওয়া চাই, যাহা সকলেই লইতে পারে। d 通 অসভ্য অবস্থায় গোরু, শস্য, গজদন্ত, কড়ী প্রভৃতি দ্রব্য বিনিময়ের নিমিত্ত ব্যবহৃত হইত। কড়ী সে দিন পর্য্যন্ত আমাদের দেশে চলিত ছিল এবং আজও লোকে অনেক স্থানে ব্যবহার করে। এই সকল বিনিময় দ্রব্যে কাজের সুবিধা হইল না। বাণিজ্যের নিমিত্ত এক স্থান হইতে অন্য স্থানে মূল্য পাঠাইতে হইলে বিপদ। এক স্থানে অধিক দ্রব্য সঞ্চিত রাখাও সহজ নয়। কিন্তু যে সকল অসভ্য জাতির অধিক অর্থ নাই, বাণিজ্যও নাই, সেখানে আজ পর্য্যন্ত সেই প্রাচীন প্রথা প্রচলিত আছে। बौब्रङ्घ, বাঁকুড়া, বৰ্দ্ধমান জেলার অন্তর্গত পল্লিগ্রামে আজও মাচ, * ধান ও সুৱিধা দিয়া লোকে অন্য বস্তু ক্রয় করে। অসভ্যদিগের মধ্যে এ প্রথা চলিতে পারে। কিন্তু যেখানে অধিক অর্থ লইয়া কারবার করিতে হইবে, অর্থ লইয়া দেশ দেশান্তরে যাইতে হইবে, সেখানে এরূপ দ্রব্যের বিনিময় কিছুতেই স্থগম নয়। এই অসুবিধার দূরীকরণ জন্য মূল্যবান, ধাতু সকল অর্থমধ্যে গৃহীত হইল। এইরূপে স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্র বিনিময় দ্রব্য বলিয়। পরিগণিত হয়। তোমার অল্প দ্রব্য ক্রয় করিবার প্রয়োজন হইল, তুমি দুই চারিট পয়সা হাতে করিয়া চলিলে, বহুমূল্য দ্রব্যের প্রয়োজন হইল, তুমি টাকা কিম্বা মোহর লইয়া চলিলে । সহজে তোমার কাজ নিৰ্ব্বাহ হইতে লাগিল । কিন্তু এককালে সকল অসুবিধার নিরাকরণ হয় না । তুমি পাঁচ মণ শর্করা দিয়া কাহার নিকট উপযুক্ত মূল্যের স্বর্ণ লইলে ; কিন্তু সেই স্বর্ণের পরিমাণ কত এবং তাহা বিশুদ্ধ কি না, ইহা প্রতিবারেই পরীক্ষা করা আবশ্যক । তাহাতে বৃথা অনেক সময় নষ্ট হয়। সেই কারণ রাজচিহ্লে চিহ্ণিত মুদ্র প্রচলিত হইল। প্রতি মুদ্র খণ্ডে মূল্য অঙ্কিত থাকে। গ্রাহক দৃষ্টিমাত্রেই তাহী বুঝিতে পারে। কেহ যদি কৃত্রিম মুদ্রা ব্যবহার করে, সে রাজদ্বারে দণ্ডিত হয় । - বাণিজ্যের অধিকতর সুবিধার জন্য ধাতুর পরিবর্তে এক এক খণ্ড কাগজ প্রচলিত হইয়াছে। বস্তুতঃ উহার কিছুই মূল্য নাই ; কেবল রাজা প্রজা উভয়ের সন্মতিতে উছার মূল্য স্বীকার করা হইয়াছে, ফল কথা উহা প্রতিজ্ঞ পত্র ভিন্ন আর কিছুই নয়। -