পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণ, রৌপ্য ও ভারতের আয় ব্যয়। ৪১৭ রাজ প্রতিজ্ঞাবিশিষ্ট কাগজকে আমাদের সকলে নোট বলিয়া জানে। বস্তুতঃ উহ! প্রতিজ্ঞাবিশিষ্ট নোটই বটে। উহা বাণিজ্য কার্য্যের পক্ষে বড় সুগম । কারণ, এককালে একস্থানে অধিক পরিমাণে অর্থ রাখা যায় এবং পত্রের ভিতর করিয়া স্থানান্তরে পাঠাইতে সহজ হয়। টাকা, মোহর ও নোট বাণিজ্য কাৰ্য্যের সুগম বটে, কিন্তু সকল দেশের টাকা, মোহর ও নোট সমান নয়। সে জন্য বিনিময়ের সময় বাটা লাগে। যে কোন দ্রব্য হউক না, তাহার গ্রাহক অল্প এবং উহা অপর্যাপ্ত হইলে সে দ্রব্যের মূল্যের হ্রাস হয়। গ্রাহক যত অল্প হইবে এবং উহা যত দুষ্প্রাপ্য হইবে, উহার মূল্যও তত বাড়িবে। পঞ্চাশ বৎপর পূৰ্ব্বে দুই মণ চাউল, দিলে একটা টাকা মিলিত। এখন এক মণ চাউল দিলে তিন টাকা পাওয়া যায়। ইহাতে স্পষ্ট বুঝা যাইতেছে, পূৰ্ব্বে চাউলের গ্রাহক অল্প এবং টাকা । মহার্য ছিল। রূপা দিন দিন যে সুলভ হইতেছে, ইহা অনেক কারণে বুঝিতে পারা যায়। পূৰ্ব্বে আমাদের দেশে কাসার অলঙ্কারের ব্যবহার ছিল। ক্রমে রূপা সস্ত হইয়া আসিল, কাসার আর আদর রহিল না। সকলেই রূপার অলঙ্কার গড়াইল। কিন্তু রূপার ও আর গুমার থাকে না,—ইহা ক্রমশঃ সস্তা হইয়া পড়িতেছে। পূৰ্ব্বে ইতর লোক আট দিন মজুরি করিলে এক তোলা রূপা পাইত,—এখন আর সে বাজার নাই, সম্প্রতি চারি দিন শ্রম করিলেই এক তোলা রূপা মিলে। কাজেই এখন সকলে সোণার অলঙ্কার প্রস্তুত করাইতেছে। রৌপ্যের মূল্য যেরূপ কমিয়া গিয়াছে, স্বর্ণের সেরূপ যায় নাই। পূর্বে চোঁদ তোলা রূপ দিলে এক তোলা সোণ মিলিত । মুসলমান বাদসাহের সময়ে এক তোলা স্বর্ণের মূল্য ষোল তোলা রৌপ্য ছিল । এইরূপে রৌপ্যের মূল্য ক্রমশঃ হ্রাস হইয়া আসিতেছে। পরে প্রায় দশ বৎসর অতীত হইল রৌপ্যের মূল্য নিতান্ত কম হইয়া গিয়াছে। এখন বাইশ তোলা রূপা দিলে এক তোলা সোণ মিলে । রৌপ্যের মূল্য হাস হইবার অনেক কারণ আছে। তন্মধ্যে দুইট প্রধান ও স্পষ্ট—প্রথম, বাণিজ্যের উন্নতির সঙ্গে দেশীয় ধন বৃদ্ধি। দ্বিতীয়, বাজারে অধিক রৌপ্য সঞ্চয়। প্রথম কারণটা মঙ্গলকর ; কিন্তু, দ্বিতীয় কারণটা ভারতের সর্বনাশ করিতে বসিয়াছে। আমাদের দেশে অতি পুরাকাল হইতে স্বর্ণমুদ্রার ব্যবহার চলিয়া আসিতেছিল। মনু প্রভৃতি অতি প্রাচীন ( & 9).