পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৬৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やSVり কল্পদ্রুম | অপরাধ করিয়াছি মার্জন করুন। ব্রাহ্মণের সাধু, অজাত-ক্রোধ। রাজার আমুনরে তুষ্ট হইয়া বলিলেন—আমাদের রোষ নাই। আমাদের ক্রোধ হইলে আপনারে সপরিবার ভস্মসাৎ করিতাম। আপনার বৃথা অমুনয়ে কাজ নাই, যে জন্য আমাদিগকে আনাইয়াছেন, তদ্বিষয়ে যত্ন করুন। ” তৎপরে রাজা ভক্ষ্য দ্রবাদি দ্বারা ব্রাহ্মণদিগের পূজা করিয়া যজ্ঞের আয়োজন করিলেন। দ্বিজগণ শাকুনস্থত্ত মন্ত্রবলে গৃধ্র ধরিয়া তন্মাংসে আহুতি দিলেন । শাকুন শাস্ত্রে নানা বিষয়ের শুভাশুভ লক্ষণ, বাজীকরণ বশীকরণ প্রভৃতি অনেক অলৌকিক ব্যাপার বর্ণিত আছে। উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের হিন্দুরা আজও এই বিদ্যার প্রতি বিলক্ষণ শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। যাদুকরণ তন্ত্র মন্ত্রের প্রতি র্তাহাদের অচলা ভক্তি । মুসলমানদের ধৰ্ম্মশাস্ত্র অনেকটা পরিমার্জিত বটে, কিন্তু নানা বিষয়ে তাহাদের কুসংস্কার অন্যান্য সকল জাতি অপেক্ষা অধিক । কোন স্থানে মহামারী হইলে মোল্লা মৌলবী পরওয়ানা লিখিয়া দেউলের প্রাচীরে পতাকায় ঝুলাইয়া দেন। পরওয়ানা দ্বারা দ্বিজদিগকে নিধন করেন, এই প্রকার অলৌকিক কাজে র্তাহাদিগকেও ব্যাপৃত দেখা যায়। ব্রাহ্মণের মন্ত্রবলে যথার্থই গৃধ্ৰুকে ধরিয়াছিলেন, ইহা কখনই বিশ্বাস্য নহে। কিন্তু যাহারা হোম যাগ যজ্ঞ প্রভৃতি দৈব ক্রিয় করিয়া থাকেন, র্তাহীদের নিকট অনেক ঐন্দ্রজালি ক ক্রম আছে। কৌশলে ও দ্রব্যগুণে র্তাহারা অদ্ভুত অদ্ভূত কাজ করিয়া অজ্ঞ লোকের অমুরাগভাজন হন। অামাদের পাঠকের মধ্যে অনেকেই শুনিয়া থাকিবেন এবং কেহ কেহ দেখিয়া থাকিবেন,—সাধকের দৈব শক্তিবলে সুরা দুগ্ধবৎ হয়, রক্তবর্ণ পুষ্প শ্বেতবর্ণ হইয়া যায়। এগুলি যাজ্ঞিকের প্রতারণামাত্র, বাস্তবিক মন্ত্রবলে কিছুই হইতে পারে না, অন্য দ্রব্য সংযোগে এই সকল কাৰ্য্য সিদ্ধ হয় । বোধ করি, ভট্টনারায়ণাদি কোন কৌশলে পক্ষিট ধরিয়াছিলেন, সাধারণ লোকে বুঝিল যে তাহারা মন্ত্রবলেই গৃধুটী ধরিলেন। " যজ্ঞের পর মহারাজের উদ্বেগ দূরীভূত হইল। তিনি ব্রাহ্মণদিগকে স্বরাজ্যে বাস করিবার জন্য অনুরোধ করিলেন। দক্ষ প্রভৃতি চাfর জন কোন উত্তর দিলেন না । ভট্টনারায়ণ কি বলিবেন, তৎ প্রতীক্ষায় তাহার মুখ পানে চাহিয়া রছিলেন। রাজার অনুরোধে অগত্য ভট্টনারায়ণ তাহাতে সম্মতি দিলেন । ইহাতে নৃপতির সানন্দের আর পরিসীমা রহিল না ।