পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৬৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\bo o কল্পদ্রুম | নাই, তখন কামকোটি আদি পাচ খানি গ্রামের নাম হইতে আর পাচটী গাই হইবার সম্ভাবনা নহে। ভট্টনারায়ণাদির যে যে সস্তানের পিতৃধনে অধিকারী হইয়া পাচ খানি গ্রাম পাইয়াছিলেন, উৎসমুদায় তাহদেরই তুধিকারভুক্ত গ্রামের অন্তভূত হইয়া গেল । এক্ষণে “ রাঢ়ীয় শ্রেণী ” এই কথার প্রকৃত মৰ্ম্ম কি তাহার বিবেচনা করা আবশ্যক। কান্যকুব্জাগত ব্রাহ্মণদিগের সন্তানের রাঢ়দেশে বাস করিয়াছিলেন বলিয়। আমরা তাহাদিগকে রাষ্ট্ৰীয় শ্রেণী বলিয়া থাকি, এ কথা সন্তোষজনক নয়। আদিশূরের প্রতিষ্ঠিত অনেক নিকষ কুলীন যজ্ঞের পর হইতে পূৰ্ব্ববঙ্গে বাস করিয়া আসিতেছেন। আবার ভট্টনারায়ণের অধস্তন দ্বাদশ পুরুষ ৩২২ বৎসর পর্য্যন্ত পূৰ্ব্ববঙ্গে রাজদত্ত বিষয় ভোগ করিয়া গিয়াছেন। র্তাহার কস্মিন কালে রাঢ়ের মৃত্তিকায় পদার্পণও করেন নাই। কি কারণে তবে তাহারা রাঢ়ীয় শ্রেণীভূক্ত হইলেন ? পাঠক! ইহার প্রকৃত কারণ বলি শুনুন আদিশূর বিক্রমপুরের নিকট রাঢ় নামে একটা পুরী নিৰ্ম্মাণ করিয়ছিলেন। যজ্ঞ সমাপনস্তে ব্রাহ্মণের সম্বৎসর সেই রাঢ় পুরীতে বাস করেন, তজ্জন্য র্তাহাদের রংশাবলীকে রাঢ়ীয় শ্রেণীর কুলীন বলা যায় । আমাদের এই মত শুনিয়া ঘটক মহাশয়দিগের পদ্মপলাশ লোচন রক্তকুও হইয়া উঠিবে। কিন্তু কিঞ্চিৎ অবহিতচিত্তে বিচার করিলে তাহার নিজ ভ্রম অবশ্য স্বীকার করিবেন। জটকদিগের পুস্তকেরও পরস্পর ঐক্য নাই। পূর্ববঙ্গের পুস্তকের সঙ্গে इ f দর এ প্রদেশস্থ ঘটকদিগের মতের অনেক পার্থক্য উপলক্ষিত হয়। ইহাতে বুঝা যাইতেছে কৌলীন্যসমীকরণের অনেক দিন পরে কুলশাস্ত্র লিপিবদ্ধ হইয়াছে। কোন ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তদ্বিবরণ লিখিত হইলে ভ্রম জন্মিবার সস্তাবনা অল্প । কিন্তু বহুকাল পরে লিখিত হইলে জনশ্রুতির উপর নির্ভর করিতে হয়। জনশ্রুতি কখনই সৰ্ব্বতোভাবে বিশ্বাস্য নয়। লোক পরম্পরায় একটা প্রকৃত ইতিহাসের কেবল শাখা প্রশাখা বাড়িতে থাকে। এত বাড়িতে থাকে যে দশ মুখের পর মূল বিষয়ট আর খুজিয়া পাওয়া যায় না। যিনি কেন হউন, গল্প করিতে বসিয়া একটুকুও অলঙ্কার দেন না এমন মিতভাষী অতি বিরল। কৌলীন্যমৰ্য্যাদাদি বিস্তারের অনেক দিন পরে কুলশাস্ত্র যে সংকলিত হইয়াছিল, তাহার বিস্তর প্রমাণ পাওয়া যায়। আদিশূর কেন যজ্ঞ করিয়াছিলেন তদ্বিষয়ে নানা মুনির নানা মত।

.