পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৬৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরিদ্বারের মেলা । Voo o প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন । হর কি পৈড়ী অতিক্রম করিয়া কিঞ্চিৎ পশ্চিমে জওলাপুর। ধনাঢ্য পাণ্ডারা এই খানে বিচিত্র হৰ্ম্ম নিৰ্ম্মাণ করিযু স্থানটাকে যেন ইন্দ্রভবন করিয়া তুলিয়াছেন । দেবী সুরধুনী হরিদ্বারকে কোলে করিয়া মাতৃস্নেহে যেন নাচাইতে নাচাইতে স্বস্বাছ পয়ঃ পান করাইতেছেন , এমন নিৰ্ম্মল অমৃততুল্য জল ত্রিভুবনে আর কোথাও নাই। বৎসর বৎসর হরিদ্বারে কুম্ভের মেলা হয়, এবং দ্বাদশ বৎসরাস্তর যে মেলা হয়, তাহার সমৃদ্ধি অকথনীয়। ভারতে হিন্দুজাতির যত তীর্থ আছে, তাহার কোথাও এত সমারেহ হয় না । এসিয়া খণ্ডের প্রায় সকল স্থানের লোক ঐ মেলাতে আসিয়া মিলিত হন। দূরবর্তী-পাৰ্ব্বতীয় জাতি, তাতার, আরব, পারলীকু শিখ, আফগান, তীৰ্ব্বং, চীন, তুরস্ক, কাবুলী প্রভৃতি সকল জাতি বাণিজ্যের উপলক্ষে তথায় আসিয়া থাকেন। তদ্ভিন্ন অসংখ্য যাত্রী বহু দূর হইতে আসিয়া ঐ পুণ্য সলিলে স্নান করেন। সচরাচর ঐ * পুণ্য ক্ষেত্রে তিন লক্ষ লোকের সমাগম হয় । কিন্তু বার বৎসর অন্তর যে মেলা হইয়া থাকে, তাহাই প্রসিদ্ধ। ঐ মেলায় দশ বার লক্ষ লোক সমবেত হয় । হরিদ্বার,—ভাবুকদিগের ভাবোদ্দীপক, ব্যবসায়ীদিগের অর্থকর, পুণ্যার্থিদিগের মোক্ষধাম । হরিদ্বারের মেলার ধূম, লোকের জনতা, মুখৈখৰ্য্যের মূৰ্ত্তিমান ভাৰ সকলি ভাবনীয় । তিন চারি শত ইংরাজ সেই মেলায় উপস্থিত থাকেন । তন্মধ্যে কেহ বা রাজকৰ্ম্মচারী, শান্তিরক্ষার নিমিত্ত তথায় গমন করেন । কেহ বা সৈনিক বিভাগে ঘোড়া উট ক্রয় করিতেছেন । কেহ বা তামাসা দেখিবার জন্য সেই মহোৎসব ক্ষেত্রে বিচরণ করিতেছেন। অনেক ধনাঢ্য মুসলমান জাতিও ক্রয় বিক্রয় জন্য সেখানে মহা ধুমধামে গমন করেন। কেহ বহু মূল্য অশ্ব আনিয়াছেন। তাহাদের খরখুরচালিত গভীর হেষ শব্দে স্থান গৰ্জ্জিত হইতেছে। কেহ হস্তী লইয়া আসিয়াছেন, কেহ উষ্ট্র বিক্রয় করিতেছেন। কেহ বিচিত্র বসন ভূষণ ফল মূল বেচিতেছে। জুয়াচোরদের মধ্যেও মুসলমানজাতি অধিক । ক্ষুদ্র দোকানদার, দরিদ্র যাত্রী আপন আপন কুটীরে কিম্বা বৃক্ষ তলে শয়ন করিয়া আছে। “চোর আসিল—চোর কি সাধু চিনিতে পারা যায় না। জামাজোড়া পরা, মাথায় পাগড়ী কাণে পালক-ঠিক যেন কাণখুসকিদার। পথের পথিক, সঙ্গে সিন্ধুক নাই পেটার নাই, বাক্স নাই, বালিসের ভিরত টাকা রাখিয়া নিদ্রা যাইতেছে। (b.6 )