পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৭৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৩২ কল্পদ্রুম। গত হইবার উপায় নাই, কেবল গ্রীক গ্রন্থকারগণ স্বাহ বলিয়াছেন তাহাই আমাদিগের শিরোধাৰ্য্য করিয়া লইতে হয়। বাস্তবিক সংস্কৃত অথবা প্রাকৃত ভাষায় ইতিহাস নামের যোগ্য কোন গ্রন্থ দেখিতে পাওয়া যায় না ।”বিষ্ণুপুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ, রঘুবংশ প্রভৃতি যে কয়েকখানি গ্রন্থে ভারতবর্ষ ও * অন্যান্য দেশের বিবরণ, রাজগণের নাম, সন্ধি, বিগ্রহ রাজনীতি, সমাজরীতি প্রভৃতির উল্লেখ আছে, তাহা ইতিহাস নহে, পুরাণ ও কাব্যগ্রন্থ মাত্র । এই সমুদয় গ্রন্থের রচয়িত্বগণ রীতিমত ইতিহাস রচনা করিবেন বলিয়া গ্ৰন্থরচনা করেন নাই। সুতরাং ঐ সমুদয় গ্রন্থে যে যে বিষয় বিস্তৃত হইয়াছে,তাহতে কবির কল্পনাই অধিক । রাজতরঙ্গিণী নামে যে ইতিহাসের অনুরূপ গ্ৰন্থখানি নছে, তাহাও প্রকৃত ইতিহাস নহে, তাহাতে সমগ্র ভারতবর্ষ এমন কি সমুদয় আৰ্য্যাবর্তবিভাগের বৃত্তান্তও লিখিত হয় 'নাই । н সংস্কৃত শাস্ত্রে প্রকৃত ইতিহাস আছে কি না, এ স্থলে তাহার বিচার করা আমাদের উদেশ্য নয়, তবে আমাদের বক্তব্য এই, এইদেশীয় গ্রন্থ হইতে যে ইতিহাসযোগ্য বিষয়ের সংগ্রহ করা যায় না তাহা নহে। পুরাণাদি গ্রন্থে শক, যবন প্রভৃতি নানা বিদেশীয় জাতির উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। তাহার কে, কোন জাতি, কোথায় তাহদের বাস, কোন সময়ে তাহদের প্রান্তর্ভাব হইয়াছিল, কখন ও কেমন করিয়া তাহারা ভারতবর্ষের ংস্রবে আসিয়াছিল, এই সকল বিষয়ের সুপদ্যোপান্ত বৃত্তান্ত নির্ণয় করিতে পারিলে ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিবৃত্ত অনেকাংশে জানা যাইতে পারে। সংস্কৃত গ্রন্থ হইতে ইহার সমুদয় উদ্ধার করিতে পারা যায় না বটে, কিন্তু বিস্তর সাহায্য পাওয়া যায়। একটা শৃঙ্খলাবদ্ধ বৃত্তান্ত সংগ্ৰহ করিতে হইলে বহু আয়াস স্বীকার ও আলোচনা আবশ্যক। পৌরাণিকের বাস্তবিক ঘটনার সহিত কাল্পনিক বৃত্তান্তের এরূপ যোগ করিয়া দিয়াছেন, তাহার। मैंनां স্থানের নানা সময়ের বিৰিধ ঘটনা কৌশল করিয়া একস্থান ও এক সময়ের বলিয়া নির্দেশ করাতে বাস্তবিক ঘটনা এত বিপৰ্য্যস্ত হইয়াছে যে তাহার মধ্য হইতে সত্যমিথ্যা নিৰ্ব্বাচন করা দুরূহ হইয়া উঠিয়াছে। কেবল যে পুরাণকারদিগের দোষে এই গোলযোগ, ঘটিয়াছে এরূপ নহে, পুরাণ রচনার বহুকাল পরে লিপিকরদিগের হস্তে পড়াতে এই গোলযোগের বৃদ্ধি হইয়াছে। আদৌ পুরাণগুলি যেরূপ ছিল, অদ্যাপি যদি অবিকল সেইরূপ