পাতা:কাঙাল হরিনাথ - জলধর সেন.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

à Ro কাঙ্গাল হরিনাথ একবাক্যে বলিয়াছেন যে কাঙ্গাল হরিনাথ দাশরথি রায়ের সমকক্ষ ব্যক্তি ছিলেন। কেহ হয় তা বলিতে পারেন, কাঙ্গাল হরিনাথের পাঁচালী গান যদি এতই উৎকৃষ্ট হইবে তাহা হইলে সে গান তঁহার বাউলের গানের ন্যায় বিস্তৃতি লাভ করিল না কেন ? ইহার দুইটী উত্তর আছে। প্রথম উত্তর এই যে, বাউলের গান শিখিবার জন্য আয়াস স্বীকার করিতে হয় না, সকলেই গাহিতে পারে। এই জন্যই বাউলের গান বিস্তৃতি লাভ করিয়াছিল। তাহার পর বাউলের গানের মধ্যে যে একটী সরল সৌন্দৰ্য্য আছে, যে প্ৰাণ-মন-মোহকারী উন্মাদনা আছে, অন্য কোন গানে তাহা নাই। বাউলের গান সকলেরই উপভোগ্য, পাঁচালী গান তাহা নহে। কাঙ্গালের পাঁচালীর প্রসিদ্ধিলাভ না করিবার দ্বিতীয় কারণ এই যে, দাশরথি রায় পেশাদার পাঁচালীওয়ালা ছিলেন। তিনি যেখানে বায়ন পাইতেন, সেইস্থানেই গান করিতে যাইতেন। কিন্তু কাঙ্গাল হরিনাথ পেশাদার পাঁচালীওয়াল ছিলেন না । তিনি সখা করিয়া আমাদের গ্রামের সুগায়কদিগকে লইয়া নির্দোষ আমোদ বিতরণের জন্য পাঁচালীর দল করিয়াছিলেন। সে দল কখনও গ্রামান্তরে গান করিতে যায় নাই ; গ্রামের ভদ্রসন্তানের দল বাধিয়াছিলেন, গ্রামেই তাহারা গান করিতেন। সেই গানের সুখ্যাতি শুনিয়া আমাদের অঞ্চলের ও পূর্বাঞ্চলের অনেক লোক কাজল হরিনাথের পাঁচালী গান শুনিতে আসিতেন । এই সকল লোকের দ্বারাই কাঙ্গালের পাঁচালী গান যাহা কিছু বিস্তৃতি লাভ করিয়াছিল। আমরা যে সময়ের কথা বলিতেছি, সে সময়ে পাংশার প্রাতঃস্মরণীয় জমিদার ভৈরবচন্দ্র মজুমদারের কনিষ্ঠ ভ্রাতা দেবনাথ মজুমদার ঐ অঞ্চলের সৰ্ব্বপ্রধান ওস্তাদ গায়ক ছিলেন। পাংশার বাবুদিগের তখন প্রবল প্ৰতাপ ছিল। লোকে বাবুর নাম করিতে হইলে বলিত “বাবুত ভৈরব বাবু।