পাতা:কাঙাল হরিনাথ - জলধর সেন.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাঙ্গাল হরিনাথ ᏚᏔ বলিলেন,-“আমি কেবল নামে সম্পাদক আছি, ইহার শুভাশুভ ভার চিরকাল তোমার উপর ন্যস্ত আছে। অতএব তুমিই ইহার উপায় উদ্ভাবন কর।” বিপদ দেখিয়া কাঙ্গাল হরিনাথ অন্য লোকের ন্যায় পশ্চাৎপদ হইতে জানিতেন না। তিনি শারীরিক ও মানসিক অসুস্থত। সত্ত্বেও বিদ্যালয়ের ভার লইয়া তিনজন শিক্ষকের কাৰ্য্য একাকী নিৰ্বাহ করিতে লাগিলেন। প্ৰভাত হইতে সন্ধ্যা পৰ্য্যন্ত তাঁহাকে নিয়মিত পরিশ্রম করিতে হইত, কিন্তু তিনি পরোপকার এবং স্বদেশের সেবারূপ যে মহৎ ব্ৰত গ্ৰহণ করিয়াছিলেন, তাহারই অনুরোধে নিজের সর্বপ্রকার সুখ স্বাচ্ছন্দ্য তুচ্ছ করিয়া, পরিপূর্ণ উৎসাহের সহিত অভীষ্ট পথে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। অবিলম্বেই তাহার পাঠশালা ঋণমুক্ত হইয়া অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল অবস্থা লাভ করিল। কিন্তু এই সংগ্রামে তাঁহাকে অস্ত্ৰাতত বিজয়ী বীরের ন্যায় শয্যাশায়ী হইতে হইল। ভগবানের কৃপায় তিনি অল্পদিনের মধ্যেই রোগমুক্ত হইয়া, অধিকতর যত্নের সহিত গ্রামবার্তা পরিচালনে রত হইলেন। অধিক মূল্য দিয়া পল্লীবাসী সংবাদপত্র গ্রহণে অসমর্থ ভাবিয়া, তিনি গ্রামবাৰ্ত্তার মূল্য ৫ এক পয়সা নিৰ্দ্ধারিত করিলেন। এত সুলভ মূল্যে সংবাদপত্র বাহির করা তখন স্বপ্নের অগোচর ছিল, কারণ ইহার অনেকগুণ মূল্য দিয়াও সংবাদপত্ৰ গ্ৰহণ করা সহজ ছিল না। কাঙ্গাল হরিনাথ অল্পমূল্যে গ্রামবার্তা প্রচার করিয়া সাধারণলোকের মধ্যে শিক্ষার পথ সুগম করিয়াছিলেন । গ্রামবাৰ্ত্তার মূল্য সুলভ করায়, তিনি অনেক টাকার ঋণজালে জড়িত হন। কাঙ্গাল হরিনাথ গ্ৰাহকবর্গের নিকট যথোচিত উৎসাহ এবং সাহায্য লাভ করিতে পারেন নাই। তিনি যাহাঁদের জন্য খাটয়া মরিতেন, যাহাদের বিপদ দূর করিতে গিয়া নিজে বিপদের মধ্যে ঝাপ দিয়া পড়িতেন, তাহারা পৰ্য্যন্ত তাহার সাধু উদ্দেশ্যে উপেক্ষা প্ৰকাশ করিত। ইহা অপেক্ষা