পাতা:কাঙাল হরিনাথ - জলধর সেন.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাঙ্গাল হরিনাথ । ՏԳ হই নাই। তাঁহার ব্ৰহ্মসঙ্গীত ও সংকীৰ্ত্তন প্ৰাণস্পর্শী। এই সকল ভক্তিপূর্ণ সঙ্গীতের আকর্ষণে উপাসকমাত্রেই মুগ্ধ হইতেন। কাঙ্গালহরিনাথের নাম-সংকীৰ্ত্তনে অনেকের নয়নে প্ৰেমাশ্রিধারা বহিয়া থাকে। এখনও তাঁহার নাম-সংকীৰ্ত্তনের পদ শ্রবণ করিবার জন্য কত লোকে আগ্ৰহ প্ৰকাশ করিয়া থাকে। ভবানী ও মাতৃবিষয়ক সঙ্গীতগুলিও তাহার অপূৰ্ব্ব সৃষ্টি-ভক্ত সাধকের আদরের সামগ্ৰী । গ্রামের যুবকগণ যাহাতে নির্দোষ আমোদ উপভোগ করিয়া সময় অতিবাহিত করিতে পারেন, সেইজন্য হরিনাথ অনেকগুলি পৌরাণিক নাটক, যাত্ৰা, পাঁচালী ও কীৰ্ত্তন রচনা করিয়া নিজেই শিক্ষার ভার গ্ৰহণপূর্বক যুবকগণের দ্বারা সেই সকল নাটক ও যাত্রার অভিনয় করাইতেন। কখন বা পাঁচালীর দল করিয়া গান করিতেন। ইহাতে যেমন যুবকগণের হৃদয়ে নিৰ্দোষ আমোদ উপভোগের স্পৃহা উত্তেজিত হইত, তেমনই । গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা পৌরাণিক পবিত্ৰ ইতিহাসের অভিনয় দর্শন করিয়া নয়ন মন চরিতার্থ করিতেন। ধৰ্ম্মপ্রাণ হরিনাথ এইরূপে দেশের মধ্যে স্বৰ্যর ভাব ও সুনীতি বিস্তারের পথ উন্মুক্ত করিয়া দেন। তাহার কাঙ্গাল ফিকিরর্চাদের বাউল সঙ্গীতে সমস্ত বঙ্গদেশ মাতিয়া উঠিয়াছিল। কাঙ্গাল-হরিনাথ, পূর্ববঙ্গের আবালবৃদ্ধবনিতার নিকটে তাঁহার বাউল সঙ্গীতের দ্বারাই অসামান্য লোক বলিয়া পরিচিত হইয়াছিলেন । এই বাউল সঙ্গীতের সহজ সরল প্ৰাণস্পৰ্শী কথায় শিক্ষিত অশিক্ষিত সৰ্ব্বশ্রেণীর লোকই মুগ্ধ হইতেন। অল্পদিন মধ্যে বাউল সঙ্গীতের মধুর উদাসসুর হাটে, ঘাটে, মাঠে, নৌকাপথে সৰ্ব্বত্রই শ্রত হইত। এখনও রাখাল বালক সন্ধ্যাকালে ক্লান্তদেহে গোচারণ-ক্ষেত্র হইতে ফিরিতে ফিরিতে উচ্চকণ্ঠে চতুর্দিক প্লাবিত ও সান্ধ্য-আকাশ প্ৰতিধ্বনিত করিয়া গাইতে থাকে,- २ .