Got R । कांक्रांकन क्षब्रिनाथ তঁার উপদেশ বিনে সকলই গরল রে ।” কাঙ্গালের গানের শব্দ পাইয়া দলের যাহারা বাহিরে নিদ্রা যাইবার আয়োজন করিতেছিলেন, তঁাহারা আর স্থির থাকিতে পারিলেন না ; সকলে আমাদের বাড়ীর মধ্যের উঠানে আসিয়া দাড়াইলেন। তখন আর কি-ঐ গান আরম্ভ হইল। আমার দাদা একটা লণ্ঠন হাতে লইয়া কাগজ দেখিয়া দেখিয়া গানের কথাগুলি বলিয়া দিতে লাগিলেন, আর দলের লোকেরা গান করিতে লাগিল। তখন পাড়ার সকলে ছুটিয়া আসিল ; আমাদের বাড়ীর মধ্যের উঠানে আর লোক ধরে না ; বাড়ীর মেয়েরা যেখানে দাড়াইয়া ছিলেন, সেইখানেই দাড়াইয়া রহিলেন, লজ্জা সঙ্কোচ কিছুই তখন থাকিল না। সে এক অদ্ভুত ব্যাপার! আমি অবাক হইয়া এই দৃশ্য দেখিতে লাগিলাম-বুঝিতে পারিলাম কোঙ্গালের একটু পূর্বের সেই কথা “দেখতে পাচ্ছিস না, কি অমোঘ অস্ত্ৰ তোরা আমার হাতে দিয়েছিস।” রাত্ৰি বোধ হয় এগারটার সময় গান আরম্ভ হইয়াছিল ; রাত্ৰি দুইটা বাজিয়া গেল, তবুও গান থামে না ; একজন যদি চুপ করে, তবে আর একজন গান ধরে। তিন চারিটি গানেই রাত্রি শেষ হইবার রকম হইল। তিনটার পর কাঙ্গালের হুস হইল ; তিনি তখন প্ৰকৃতিস্থ হইলেন, তিনি তখন কোন এক আনন্দলোক হইতে আবার আমাদের পৃথিবীতে ফিরিয়া আসিলেন। গান ভাঙ্গিয়া গেল, কাঙ্গাল বিশ্রাম করিতে গেলেন । দলের অন্যান্য লোকেরাও বিশ্রাম করিতে গেল । তখন আমি আর প্রফুল্লচন্দ্ৰ বাহিরে যাইয়া ঘাসের উপর বসিলাম । প্ৰফুল্প বলিলেন “আজ রাত্ৰিতে আর ঘুম হইবে না, এস আমরা বসিয়াই রাত কাটাই।” কিন্তু কতক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া থাকা যায়।
