পাতা:কাঙাল হরিনাথ - জলধর সেন.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀ কাঙ্গাল হরিনাথ যাইতে হইলে, রাজসাহী সহর হইতে কয়েক মাইল দূরে ষ্টীমার হইতে নামিতে হহঁত, তাহার পর যাহার জন্য যেমন ব্যবস্থা থাকে তাহা হইত। এদিকে ষ্টীমারও সকল দিন যাইতে পারিত না ; পদ্মার চরে ঠেকিয়া অনেক দিন তাহাকে বন্দী-দশায় থাকিতে হইত। এই কারণেই পূর্বে বন্দোবস্তের প্রয়োজন হইত। শ্ৰীমান অক্ষয় আমার ‘তারের’ জবাবে জানাইলেন যে, দেবী রাণীভবানীর নাটোর মোকামে আমার জন্য গো-যান সজ্জিত থাকিবে। তথাস্তু ! একদিন অপরাহ্নকালে নাটোর নামিয়া গো-যানে আরোহণ করিলাম । পরমানন্দো ঝাকাঝাকি খাইতে খাইতে রাত্ৰি প্ৰায় একটার সময় বেদনাক্লিষ্ট দেহখানিকে অক্ষয়ের বাসায় পৌছাইয়া দিলাম। আমি মনে করিয়াছিলাম, সে রাত্ৰিতে আমার জন্য পূর্ণ অনাহারের সুব্যবস্থা ভগবান করিয়াছেন ; কিন্তু তখন ভুলিয়া গিয়াছিলাম যে, ভগবানের দুইজন প্রতিনিধি-দুইজন সাধক ভূত্য আমার জন্য—আমার ন্যায় অধমের প্রতীক্ষায় বসিয়াছিলেন। সেই দুইজন আর কেহই নহেন—পণ্ডিত বিজয়কৃষ্ণ, . আর কাঙ্গাল হরিনাথ। সকলেই নিদ্রিত হইয়াছেন,-রাত্ৰি দশটা এগারটা পৰ্যন্ত অপেক্ষা করিয়া সকলেই স্থির করিয়াছিলেন যে, কোন কারণে হয় তা আমি সেদিন যাইতে পারি নাই ; কিন্তু তাহারা সে সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেন নাই। আমি পৌছিয়া দেখি, দুইজনে বসিয়া কথাবাৰ্ত্তা কহিতেছেন। আমি দুইজনকে প্ৰণাম করিয়া আসন গ্ৰহণ করিলাম। তখন আর সকলেও জাগিয়া উঠিলেন। আমি তত রাত্ৰিতেই আহার করিলাম । সুদীর্ঘ পথ গাে-যানের সহিত যুদ্ধ করিয়া আমি অবসন্ন হইয়া পড়িয়াছিলাম; রাত্রিও প্রায় তখন দুইটা ; সুতরাং সে সময়ে বিশ্রামের নিতান্তই প্রয়োজন হইয়া পড়িয়াছিল। কিন্তু কাঙ্গাল আদেশ প্রচার করিলেন