পাতা:কাফ্রি দাসের বৃত্তান্ত - লী রিচমণ্ড.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩

 তথায় এক মহাপ্রস্তরে বসিয়া পুস্তক পাঠ করিতেছে এমত কোন লোককে আমি হঠাৎ দেখিতে পাইলাম। যে স্থানে আমি দাঁড়াইয়াছিলাম, সে স্থানহইতে প্রায় দুই শত হাত নীচে ঐ ব্যক্তি ছিল, কিন্তু তাহার বস্ত্রদ্বারা ও শরীরের বর্ণদ্বারা আমি স্থির করিলাম যে সে ঐ কাফ্রি শিষ্য, ও তাহার হস্তস্থিত বহি ধর্ম্মপুস্তক। এমত নির্জন স্থানে তাহার সহিত আমার সাক্ষাৎ হওনের কোন সম্ভাবনা ছিল না, অতএব হঠাৎ আমি তাহাকে এই রূপে একাকী পাঠ করিতে দেখিয়া অতি আনন্দিত হইলাম। তাহাতে আমি মাছুয়া ও রাখালদ্বারা আড়ূরিতে খোদিত এক অসমান সোপান দিয়া তীরে নামিলাম, কিন্তু কাফ্রি দাস এমত মনঃসংযোগপূর্ব্বক পাঠ করিতেছিল যে আমি তাহার নিকটবর্ত্তী না হইলে সে আমাকে দেখিতে পাইল না। পরে আমি কহিলাম, কে হে, উইলিয়ম?

 সে বলিল “হাঁ মহাশয়, আপনাকে দেখিয়া আমি বড় আনন্দিত হইলাম। আমি বোধ করিয়াছিলাম যে ঈশ্বর ও আমা ছাড়া এখানে আর কেহ নাই। মহাশয় এস্থানে কিরূপে আইলেন?”

 আমি তোমার প্রভুর গৃহে তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাইতেছিলাম, কিন্তু চতুর্দ্দিক্স্থ দেশ দর্শনের জন্যে এস্থানে আইলাম। আকাশ নির্ম্মল হইলে আমি সমুদ্র ও জাহাজ দেখিতে এস্থানে অনেক বার আসিয়া থাকি। বহি কি ধর্ম্মপুস্তক?

 “হাঁ মহাশয়, এই আমার প্রিয় উত্তম ধর্ম্মপুস্তক।”

 হে উইলিয়ম, তুমি যে এইরূপে কাল যাপন করিতেছ, ইহা আহ্লাদের বিষয় এবং উত্তম চিহ্ন বটে।

 “আজ্ঞা মহাশয়, ইহা আমার প্রতি ঈশ্বরের অনুগ্রহের চিহ্ন, কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমি কখন উত্তম নহি।”