পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»obr কাব্যের কথা তাই আমার মনে হয় যে, রামমোহন প্ৰতিভাশালী মহাপুরুষ হইলেণ্ড বাঙ্গলার প্রাণের সঙ্গে তাহার পরিচয় ছিল না । কেন না বাঙ্গলার নিজস্ব যে বৈষ্ণব ভাব যাহ। বাঙ্গলার প্রাণকে ধৰ্ম্মকে জাতিকে সমাজকে সকল রকমে বাঙ্গলার সাহিত্যকে পুষ্ট করিয়াছে, তাহাকে ত্যাগ করিয়া তিনি প্ৰতিষ্ঠা করিতে গেলেন- মায়াবাদী বেদান্ত ও কোরানের সঙ্গে হিন্দুর শাস্ত্রকে বেশ করিয়া গুলাইয়া দিলেন। অসীম ধী সক্তিসম্পন্ন মেধাবী রামমোহন তাহার বুদ্ধির অসামান্য প্ৰতিভার ঘোরতর মল্ল যুদ্ধ দেখাইয়া গেছেন একথা অস্বীকার করিতে পারিব না। তবে এই কথা বলিতে আমি বাধ্য হইব যে, খৃষ্টান পাদরীদের বিরুদ্ধে হিন্দুর হইয়া তিনি ষােতই তর্ক করুন না কেন, এই ফেরঙ্গ আসিত না,---কখনই আসিত না, বাঙ্গলার ভাষাকে ইংরাজী করিতে পারিত না, বাঙ্গলার ভাবকে কখন ফেরঙ্গ করিতে পারিত না,--যাদি। তিনি আমাদের দেশের সাধনকে ভাল করিয়া উপলব্ধি করিতেন ও করিয়া ইংরাজী সভ্যতা সাধনা এমন করিয়া দুই হাতে বরণ করিয়া গৃহে না তুলিতেন। রামমোহাম আসিবার পূর্কে বাঙ্গালার সাহিত্য, ধৰ্ম্ম ও গান রামপ্ৰসাদের সুরে-তেঁাহার আদর্শে মাতিয়া উঠিয়াছিল। ঠিক যে বৎসর রামপ্ৰসাদের মৃত্যু হয়, সেই বৎসরই রামমোহন রায় জন্মগ্রহণ করেন। --রামপ্রসাদ যে সুর গাহিয়া গেলেন, রামমোহন ঠিক তার উলটা সুর ধরিলেন। রামমোহন গান করিলেন,- ‘অতএব সাবধান, ত্যজ দম্ভ অভিমান, বৈরাগ্য অভ্যাস কর, সত্যতে নির্ভর কর ৷” আর রামপ্রসাদের গানের সুর এই একটি গানে বেশ বুঝা যাইবে। V “আর ভুলালে ভুলব না গো । আমি অভয়-পদ সার করেছি, ভবে হেলাব দুলব না গো ৷