পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রস বিচারের বিষয় নহে, অনুভূতির বস্তু। কল্পনায় যাহার উন্মেষ, সত্যে তাহার প্রতিষ্ঠা। জীবনে তাহার চরম অনুভূতিই জীবনের ধৰ্ম্ম । কল্পকলা সেই রসের অনুভূতিকে রূপের আশ্রয়ে প্ৰকাশ করে। বিচিত্র রূপে, বিচিত্র বর্ণে, গন্ধে, সুরে, মহাভাবের আবেশে কি আভাষে, মানুষে{ জীবন-কুঞ্জে তাহার স্ফৰ্ত্তি হয়। এই জীবনের রূপ ও রঙের খেলার মাঝে প্ৰাণ-নিকুঞ্জে ষে দিন বঁাশী বাজিয়া উঠে, সে দিন সে মুহূৰ্ত্তেই সুন্দর মধুর রূপে বিশ্ব ভরিয়া যায়, আর অনেক দিনের অন্ধকারের অবগুণ্ঠন খসিয়া পড়ে । জীবনের এই ষে অনেক দিনের জড়ত, তাহা নির্বিষ খোলসের মত পড়িয়া থাকে ; বিশ্ব-প্ৰকৃতি মধুর রূপে হাসিয়া চায়। এক আত্মা মহা-ইন্দ্ৰ-সম সহস্ৰ কটাক্ষে দেখে, জগতে সুন্দরকল্যাণ, মধুরী-মঙ্গল গ্ৰহ-নক্ষত্র, ঋতু-কাল-মাস-বর্ষ, তৃণ-গুল্ম-বৃক্ষ-লতা, নদ-নদী, শ্যামায়মান প্ৰান্তর অভ্ৰভেদী হিমালয়, তরঙ্গ-চঞ্চল বিশাল সাগর সেই একই রূপের রূপবৈচিত্র্যে আপনার আত্মবিকাশ করিতেছে। বাঙ্গলার গীতিকবিতায় আমি সেই আত্মবিকাশের কথাই বলিয়াছিলাম। সেই রূপান্তরের কথা, সেই রূপ হইতে রূপে বিলাস-বিবত্তের কাহিনী, সেই মহাভাবের সাধনা, সেই সাৰ্ব্বভৌমিক কল্পকলার প্রতিষ্ঠার কথাই কহিয়াছিলাম । যে আলো লইয়াৰ্তাস্থদের নিকট উপস্থিত হইয়াছিলাম, সে আলোক যে আমার প্রাণে জাগিয়াছে। মরমের ‘মণিকোটায়' নিজের যে লুকান আলোক জলিয়া উঠে, তাহাকে ত’ চাপিয়া রাখা যায় না। আত্মা যে