পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপান্তরের কথা ŞSბ\O প্ৰাণ স্রোতে টলমল করিতেছে। সেই লীলা-চঞ্চল মূরতি-স্রোতের সঙ্গে প্ৰাণের নিঃসঙ্গ পরিচয়-লাভই প্রেমের এক দিক ৷ রূপের ভিতর দিয়া প্ৰাণের এই লীলামূৰ্ত্তির পরিচয় যখন ধ্যানগত হয়, তখন সেই মূৰ্ত্তির সহিত অহৈতুকী পরিচয় হয়, তখন সেই নিজের মাধুরী সেই মূৰ্ত্তি-স্রোতের ভিতর আস্বাদন হয়। তখনই সত্য রূপান্তর । প্রেমের প্রথম জাগরণে রতির রাগানুরাগ জাগে, সেই জাগরণের সঙ্গে নিজের মাধুরী আস্বাদের কামনা, বাসনা, মমত্ব, মদনত্ব জাগে। যখন তাহা প্রেমের ভূমিতে আসিয়া দাঁড়ায় ?-- সেই প্রেমের ভূমিতে একবার পা রাখিতে পারিলে অখিল-রসামৃত মূৰ্ত্তির আভাষ প্ৰাণে-স্ফটিকে সুৰ্যকিরণ-প্ৰতিবিম্বের মত স্বচ্ছ হইয়া পড়ে। প্ৰাণ যখন দর্পণের মত স্বচ্ছ হয়, তখনই আত্মার যে প্ৰাণময় সৌন্দৰ্য্য, তাহার স্বরূপকে পাই। তখন বুঝিতে পারি। সে প্ৰাণের সত্য অনুভূতিতে, নিখিল রস, রসশেখরের রস-চঞ্চল যে সত্যমূৰ্ত্তি, তাহাই প্ৰাণে ফুটিয়া উঠে। সেই ফুটনের সঙ্গে সঙ্গে তাহার অন্তরের রূপকে সত্যদর্শন হয়, তাহাকে স্পর্শ করা যায়, তখন তাহার গায়ের গন্ধ নাসিকায় ভাসিয়া আসে-প্ৰাণ-স্রোতের লীলায় তখন সেই ধ্যানগত পদ্ম ফুটিয়া উঠে । কলাবিদের জীবনে, কবির জীবনে, এমনি করিয়া সেই সত্য পরিচয় হয়। কলাবিদ ও কবির রূপান্তর-তাহার দৃষ্টি তাহার প্রকাশ!-- সাধক তাহার সাধনায় সমাধিতে-তাই মিলাইয়া আনন্দ-ঘন-রাসে মজিয়া যায় ! এই যে রূপান্তর, ইহা সেই অনন্তের সঙ্গে মুখোমুখি পরিচয়লাভ-প্ৰাণে প্ৰাণে বুকে বুকে স্পর্শমণি ছুইয়া cगांनी झ७ध ! আমি বলিতে চাই যে, একমাত্র চণ্ডীদাসের গান ছাড়া বাজলা গীতি-কবিতার শেষ যুগে রামপ্ৰসাদের গানে সেই রূপান্তর হইয়াছে।