পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R O | ९|| সেই প্ৰাণ-তরঙ্গে একদিন অকস্মাৎ ফুটিয়া উঠিল, এক অপূর্ব অসংখ্যদল পদ্মের মত বাঙ্গলার গীতিকাব্য ! কিন্তু ফুল ত একদিনে ফুটে না । তাহার ফুটনের জন্য যে অতীতের অনেক আয়োজন আবশ্যক। তাহার প্ৰত্যেক দলের মধ্যে যে অনেক গান, অনেক কথা, অনেক কাহিনী । তাহার গন্ধের মধ্যে যে অনেক কালের অনেক স্মৃতি, অনেক মধু জড়াইয়া থাকে । তাহার ডাটায় যে জন্ম-জন্মান্তরের চিহ্ন লুকান ধাকে । ফুল যে অনন্তকাল ধরিয়া ফুটিতে ফুটিতে ফুটিয়া উঠে । বাঙ্গলার গীতিকাব্য যে কখন কোন আদিম উষায় ফুটিতে আরম্ভ করিল, আমি জানি না। শুনিয়াছি, সন্ধ্যা-ভাষায় লিখিত পুরাতন বৌদ্ধ দোহ্য় তাহার উন্মেষ দেখিতে পাওয়া যায়। চণ্ডিীদাসের সময় সেই গীতিকাব্যের বিকশিত অবস্থা । কিন্তু তার আগে অনেক গীতিকাব্য না লেখা হইয়া থাকিলে এরূপ কবিতা সম্ভব হয় বলিয়া আমার মনে হয় না । আজকাল আমাদের সাহিত্যের ইতিহাস সম্বন্ধে অনেক অনুসন্ধান, অনেক আলোচনা ও গবেষণা চলিতেছে। আশা করি, একদিন আমরা আমাদের গীতিকাব্যের এই হারাণ ধারাকে খুজিয়া বাহির করিতে পারিব। চণ্ডিীদাসের লিখিত গীতিকাব্য, ইহাই বাঙ্গলার যথার্থ গীতিকাব্য ; এই কবিতাগুলির মধ্যে যে প্রাণের সাড়া পাওয়া যায়, তাহাই বাঙ্গলা গীতিকবিতার : প্ৰাণ । বাঙ্গলা চক্ষু মেলিয়া চাহিয়া দেখিল, রূপে এ বিচিত্র ভুবন ভরিয়া আছে। কত কাল, কত যুগ, কোন অন্ধকারের অন্ধকারে রূপের ধ্যানে মগ্ন আমার বাঙ্গলা জাগিয়া দেখিল, উৰ্দ্ধে অনন্ত নীল, নীলের পর নীল, অঞ্চল ধারে কল-কল্লোলে গঙ্গা বহিয়া যায়, চরণতলে কলহাস্যময় মহাসমুদ্র অনন্ত সুরে গাইয়া উঠিয়াছে, --তাহার বুকের উপর আছড়াইয়া পড়িতেছে ; শিরে হিমালয় কাহার ধানে