পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গলার গীতিকবিতা \\ র্তাহার এক বিরাট হৃদয় । সেই বিরাট হৃৎপিণ্ড এই বিরাট প্ৰাণসমষ্টিকে বক্ষে করিয়া কালের ভিতর দিয়া অকালে ধাইতেছে। তখন তাহার মন সেই বিরাটের রূপের রসে মজিয়া এক অভিনব রূপান্তর সৃষ্টি করে। সেই রূপান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সকল বৈচিত্র্যের মধ্যে এক মহামিলনের অনাহত সঙ্গীত ধ্বনিয়া উঠে। বাঙ্গলার গীতি-কবিতায় আমি তাহারি সন্ধান পাইয়াছি। বাঙ্গল সাহিত্যের গীতি-কবিতার ধারায় প্ৰথম ষে ভাষায় আমরা আজকাল গান ও কবিতা পাই, তাহাকো নাকি সন্ধ্যাভাষা বলে । সুপ্তি ও জাগরণের সন্ধি, নূতন ও পুরাতনের সন্ধি, আলো ও দো-আলোর খেলা। এই সন্ধ্যাভাষায় সহজিয়া ধৰ্ম্মের সকল গানই রচনা, আর তাহাই নাকি বাঙ্গলার সর্বপ্রাচীন সম্পদ। তাহাতে যে সমস্ত পদ পাওয়া যায়, তাহার অর্থ ও রহস্য এখনও ভাল করিয়া বুঝা যায় নাই। তবে সহজিয়ার মধ্যে যে স্বাভাবিক জীবনের স্ফৰ্ত্তির উপর জীবনকে গাঁথিয়া তুলিয়া আনন্দের আস্বাদ পাওয়া যায়, এ কথার ভাব তাহার মধ্যে আছে, তা সে যত সন্ধ্যারই আলো-আঁধারি রউক না কেন। তাহার পর গৌড়ীয় যুগ, সেই গৌড়ীয় যুগে চণ্ডিদাস প্রভৃতি কবিদের পদাবলি-গান অতুলনীয়। আমার মনে হয়, সে ওই সন্ধ্যা-ভাষার বৌদ্ধ সহজিয়ার পদ হইতে চণ্ডিীদাসের রাগাত্মিক পদের মধ্যে কালের রিপুল প্রভাব আছে ; অনেক ভাঙ্গাগড়ার ভিতর দিয়া না। যাইলে ভাষার ছাদ ও রীতি যাহা চণ্ডিীদাসে ফুটিয়াছে, তাহা হইতেই পারে না। তবে এ সমস্ত মতামত লইয়া আলোচনা করিবার মত পাণ্ডিত্য আমার নাই । আমি শুধু ভাবের দরজার দ্বারী, সেই মন্দিরের পূজার কিঙ্কর, আমি তাহার কথা কহিব এবং চণ্ডিদাস হইতে আরম্ভ করিয়া পরবর্তী বাঙ্গলা }