পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গলার গীতিকবিতা V গৌড়ীয়-বৈষ্ণবের সাধনা। এই রস যে, সেই রাসামৃত মায়াধীশের প্রেমের খেলা, যাহার কাছে “মায়া আসি প্ৰেম মাগে৷” কেহ কেহ বলেন, চণ্ডিদাস দুঃখের কবি, বিদ্যাপতি সুখের কবি, তঁাহারা বোধ হয়, জীবনের সুখ-দুঃখকে ভাল করিয়া বুঝেন নাই। সুখ যখন রূপান্তর হইয়া ভাগবত সত্যে ফুটিয়া উঠে, তখন তাহা সুখ নয়, দুঃখ এবং দুঃখ যখন ভাগবত সত্যে গিয়া পৌছায়, তখন তাহা দুঃখ নয়, সুখ ; তাই চণ্ডিদাস গাইয়াছেন - ‘’’ श् छथ छूत्र उठाई সুখের লাগিয়া যে করে পীৱিতি দুখ যায় তারি। ঠাঞি ।” শুষ্ঠাম-বিরহে রাধিক বিবাশা, পিরীতি যে সুখের সাগর তাহে দুখের মকর, ফিরে নিরন্তর, প্ৰাণ টলমল করে অন্তর বাহিরে কুটু কুটু করে, সুখে দুখ দিল বিধি-এই অবধি যুগল প্রেমের লীলায় যে মিলন-বিরহের রস-মাধুৰ্য্য, তাহাই ফুটিল, কিন্তু এইটুকু হইল ইন্দ্ৰিয়ের বিক্ষোভ, হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা, স্ত্রীপুরুষের সহজাত মিলনের রসাভাসের মধ্যে যেটুকু তাই, কিন্তু তাহার পরই বাহির ভিতর এক হইয়া গেল, মানুষের এই সুখ, এই দুঃখের ভিতর হইতে চণ্ডিদাস সেই ভাগবত সত্যকে রূপান্তরে টানিয়া তুলিলেন। ইহা নীতিবিদের নীতি নয়, ইহা শুধু রসপণ্ডিতের রস শাস্ত্রের আলাপ নয় ; এ যে জীবনের এক চরম অনুভূতির কথা । এই চরম অনুভূতি বিদ্যাপতির হয় নাই। অনুভুতি শুধু আনন্দের ভিতর দিয়া ত’ হয় না-সকল রকম বিচিত্ৰত না আসিলে জীবন কে উপলব্ধি করিতে পারে ? এই সুখ-দুঃখের ভিতর দিয়াই সেই প্ৰাণের সাক্ষাৎকার হয়, আর প্রাণের সাক্ষাৎকারের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হৃদয়