পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(፩ ክ” কাব্যের কথা হয় নাই। চণ্ডিীদাসের প্ৰেম, বিদ্যাপতির রূপ-বিলাস, লোচনের গৃহধৰ্ম্মের সরল সহজ প্ৰাণের কথার সঙ্গে যে দিন সেই সার্বভৌমিক কল্পকলার সুচনা হইবে, সে দিন জগৎ দেখিবে, এই বাঙ্গলার প্রাণ কোথায়, তাহার মৰ্ম্ম কোথায় ! আবার বাঙ্গলার মাটীতে তেমনি আবেগে, তেমনি সোহাগে তেমনি মধুর করুণ উজ্জ্বল লীলায় ফুটিয়া উঠিবে। পুর্ণ হইতে পুর্ণতর রূপ হইতে রূপান্তরে ফুটিয়া জাগিয়া উঠিবে। এই নরদেহ ধারণ করিয়া জীবন্মুক্ত হইয়া জগতের অজ্ঞ, বৃদ্ধ, শ্ৰান্ত, ভূষিত, তাপিতের জন্য যে করুণ, মহাপ্ৰভুতে তাহার পূর্ণ বিকাশ আমরা দেখিতে পাই। শ্ৰীনিত্যানন্দে আমরা তাহার জীবন্ত, সজীব, জাগ্ৰত মুক্তির ভাব পাই । যখন কলসীর কাণায় কপাল কাটিয়া দর-দর ধারে রক্ত করিতেছে, তখন গাইতেছেন “মেরেছি। কলসীর কণা তা বলে কি প্ৰেম দেব না ৷” এই দুই ছাত্র যখন মনে পড়ে, তখন মন প্ৰাণ এক অদ্ভুত নব-রাসে উছলিয়া উঠে, আঁখি ছল ছল করে, মনে হয় আমার জন্ম সার্থক, সার্থক আমি বাঙ্গলায় জন্মিয়াছিা! M বৈষ্ণব কবিদের এই অফুরন্ত গানের সুধার ধারায় সারা বাঙ্গলা দেশ ভাসিয়া গিয়াছিল । সমাজে দেশে তাহার। প্ৰাণ-প্ৰতিষ্ঠা হইয়াছিল। কিন্তু কালে সকলি ত বদল হয়। সেই সাব-জুড়ান প্ৰাণ-মাতান সুধা* স্রোতে ধীরে ধীরে চড়া পড়িল, সে ধারা শুকাইয়া আসিতে লাগিল । সাহিত্যের অন্যান্য ভাগ শাখা-পল্লবে ভরিয়া গেল, কিন্তু যেমনটি ছিল, তেমনটি আর হইল না। যখন মুসলমান বাঙ্গলায় প্রবেশ করিল, তখন বাঙ্গালীর জীবনীশক্তি একেবারে হারায় নাই, তখন সমাজে মাঝে মাঝে বিপ্লব বাধিয়াছে ; সুর উঠিয়া, সুর নামিয়াছে। তাহার পর সে নিজেকে