পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b কাব্যের কথা বিলাতী গীতি-কবিতায় কবি বিশ্বের সকল পদার্থকে তাহার বুকের ভিতর টানিয়া লন। তাহাই প্ৰাণের ভাব-রাসে সিঞ্চিত করিয়া প্ৰকাশ করেন। সে প্ৰকাশে ভঁহাদের নিজত্বের ছাপ দিয়া দেন । তাহাতে হয় এই যে, প্ৰত্যেক রূপই কবির নিজের ভাবের ছাচে গড়া হয়। যে কবির আত্মায় সমস্ত বিশ্বের এই রূপ প্ৰতিভাত হয়, আর তাহা কবির মনের রূপের ছাচে গড়িয়া উঠে, সেই কবির। কাৰ্য্যই এই গীতি-কবিতা ; কিন্তু এই যে গীতি-কবিতা, ইহা আমাদের cाौंध्र नम्न । আমাদের দেশে চণ্ডিদাস হইতে রামপ্ৰসাদ ও কবিওয়ালার কেহই এই গীতি-কবিতা লেখেন নাই। তঁহার রচিয়া গেছেন। গান, সেখানে আমরা কবিকে দেখি দ্রষ্টা । দুজনের প্রাণের খেলায় দর্শক হইয়া আনন্দারস • ভোগ করিতেছেন । সেই আনন্দের সুরের রসে সব কথাগুলি ভিজান । মানুষের যে প্ৰাণের প্রকৃতি, সে যেন পাজরা ভেদ করিয়া স্বাভাবিকভাবে পাখীর গান গাওয়ার মত গলা ছাড়িয়া দিয়াছে। ইহাই হইল-বাঙ্গল গীতি-কবিতার বা গানের প্রাণ। সেই জন্য আমি বলিতে •চাই, বাঙ্গলার প্রাণের ভিতর হইতে গানই বাহির হইয়াছিল, ইংরাজীপ্ৰমুখ যে বিদেশী সাহিত্য আমাদের দেশে আমদানি হইয়াছে, তাহারই ফল এই বিলাতী গীতি-কবিতা । এ ধারা বাঙ্গলার নিজস্ব নয়। মনকে, চক্ষুকে, প্ৰাণকে ঠিক ঐ বৈদেশিক শিক্ষার ছাঁচের ভিতর দিয়া না লইয়া ' গেলে, ও গীতি-কবিতার ধারা সম্যক উপলব্ধি হওয়া দুষ্কর। গীতিকবিতায় থাকা চাই,- তাহার ভাবের একাত্ম-রস আর সেই রসের একটি পরিপূর্ণস্বরূপ ফুটুইয়া তুলাই তাহার কাজ। যেখানে সেই রস খুব গাঢ় ও খুব অল্প কথা বা ভাবের দ্রুতকম্পনের মধ্য দিয়া প্ৰকাশ হইবে, সেইখানে গীতি কবিতার সার্থকতা। সেই ভাবের ও রস-সৃষ্টির মুহূর্তে