পাতা:কায়স্থ-প্রসঙ্গ - সরোজকুমার সরস্বতী.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ কায়স্থ-প্রসঙ্গ । জাতি খৃষ্টীয় সাম্যমন্ত্রে দীক্ষিত, খৃষ্টীয় শাস্ত্রের শাসনে অনুশাসিত , তাহাদের ধৰ্ম্ম তাহাদিগকে ঐরূপ সাম্য শিক্ষাই দেয়। কিন্তু আমাদের পক্ষে তাই ভিত্তিহীন । কারণ আমরা খৃষ্টান নই। সাময়িক উত্তেজনাম বশে কিছুদিন সাম্য ভাব দেখান যায় বটে কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত টেকেন । স্বরেনবাবুকেও বৃদ্ধকালে পৈতা বাহির করিয়া বক্তত করিতে দেখিয়াছি। চিত্তরঞ্জনও অনেক ঘুরিয়া ফিরিয়া আসিয়া অবশেষে এই পৈতার উপাসনাই করিয়াছেন, তাহাও দেখিয়াছি। ব্রাহ্মদের ভিতরেও যে জাতিভেদ মাথা তুলিতেছে তাহাও দেখিতেছি । পাশ্চাত্য শিক্ষা, সৰ্ব্বোচ্চ শিক্ষিত ভারতবাসীরও জাত্যভিমান ভুলাইয়ু দিতে পারেন। যে নিজের জাতি তুলিতে পারেন। সে পরের জাতিও ভূলিতে পারেন, ইহা স্বাভাবিক ধাক্কা খাইলেই ফিরিয়ু আসিয়া নিজের গণ্ডীতে উপবিষ্ট হয় । অতএব হিন্দুকে এই পথেই যাইতে হইবে ; অন্য পথ নাই । বর্ণাশ্রমধৰ্ম্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। যদি উঠাকে গুণ-কৰ্ম্মের ভিত্তির উপরে পুন: প্রতিষ্ঠিত করিতে পারা যায় তবে উহ পুনরায় সমগ্র জগতের আদর্শ হইবে । আজ যে “ব্রাহ্মণ সম্মিলনী," "কায়স্থ কনফারেন্স,” “তিলি সন্মিলনী,” “কৰ্ম্মকার সমিতি" ইত্যাদি নানা জাতির সাম্প্রদায়িক আন্দোলন সভা হইতেছে, ইহা খৃষ্টীয় সাম্যের সূচক নয়, বরঞ্চ বর্ণাশ্রমধৰ্ম্মের সংস্কারজাপক। ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করি পবিত্র বর্ণাশ্রম ধৰ্ম্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হউক, এবং গীতোক্ত বর্ণাশ্রমধৰ্ম্মের পরিণাম--“বিদ্যাবিনয়সম্পন্নে ব্রাহ্মণে গাব হস্তিনি। শুনি চৈব শ্বপাকে চ পণ্ডিতা: সমদশিন: ॥”—এই ভগবঙ্গবাক্য সার্থক হউক। ভারতে আদর্শ সাম্য প্রতিষ্ঠিত হউক। গুণ ও কৰ্ম্মম্বারা বর্ণ হইতে বর্ণান্তরে প্রবেশের রুদ্ধদ্বার আজ মুক্ত হউক, অনাৰ্য্যধৰ্ম্মী আধ্য ধৰ্ম্ম ও আচার গ্রহণ করিয়া আধ্য হউক, হিন্দুজাতি বিশ্বমানবের হিতের জন্য বাচিয়া থাকুক।