পাতা:কালান্তর - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কালান্তর

লোকহিত লোকসাধারণ বলিয়া একটা পদার্থ আমাদের দেশে আছে এটা আমরা কিছুদিন হইতে আদায় করিতেছি এবং এই লোকসাধারণের জন্য কিছু করা উচিত’ হঠাৎ এই ভাবনা আমাদের মাথায় চাপিয়াছে। যাদৃশ ভাবনা যত সিভির্ভবতি তাদৃশ। এই কারণে, ভাবনার জন্যই ভাবনা হয়।

আমরা পরের উপকার করিব মনে করিলেই উপকার করিতে পারি উপকার করিবার অধিকার থাকা চাই। যে বড়ো সে ছোটোর অপকার অতি সহজে করিতে পারে কিন্তু ছোটোর উপকার করিতে হইলে কেবল বড়ো হইলে চলিবে না, ছোটো হইতে হইবে, ছোটোর সমান হইতে হইবে। মানুষ কোনো দিন কোনো যথার্থ হিতকে ভিক্ষারূপে গ্রহণ করিবে না, ঋণরূপেও না, কেবলমাত্র প্রাপ্য বলিয়াই গ্রহণ করিতে পারিবে।

কিন্তু, আমরা লোহিতের জন্য যখন মাতি তখন অনেক স্কুলে সেই মত্ততার মূলে একটি আত্মাভিমানের যদ থাকে। আমরা লোক সাধারণের চেয়ে সকল বিষয়ে বড়ো, এই কথাটাই রাজকীয় চালে সম্ভোগ করিবার উপায় উহাদের হিত করিবার আয়োজন। স্থলে উহাদেরও অহিত করি, নিজেদেরও হিত করি না।

{হিত করিবার একটিমাত্র ঈশ্বরদত্ত অধিকার আছে, সেটি প্রতি। প্রীতির দানে কোনো অপমান নাই কিন্তু হিতৈষিতার দানে মানুষ অপমানিত হয়। মানুষকে সকলের চেয়ে নত করিবার উপায় তাহার হিত করা অর্চ তাহাকে প্রতি না করা।

এ কথা অনেক সময়েই শোনা যায় যে, মানুষ ভারত কৃতজ্ঞ যাহার কাছে সে কী তাহাকে পরিহার করিবার এ তাহার চো।

২৯