কেননা ধনাভিমানী ক্ষমতা আনে তামসিকতা। কন্গ্রেস আজ বিপুল সম্মানের ধনে ধনী, এতে তার স্বর্গরাজ্যের পথ করছে বন্ধুর। মুক্তির সাধনা তপস্যার সাধনা। সেই তপস্যা সাত্ত্বিক, এই জানি মহাত্মার উপদেশ। কিন্তু এই তপঃক্ষেত্রে যাঁরা রক্ষকরূপে একত্র হয়েছেন তাঁদের মন কি উদারভাবে নিরাসক্ত? তাঁরা পরস্পরকে আঘাত করে যে বিচ্ছেদ ঘটান সে কি বিশুদ্ধ সত্যেরই জন্যে? তার মধ্যে কি সেই উত্তাপ একেবারেই নেই যে উত্তাপ শক্তিগর্ব ও শক্তিলোভ থেকে উদ্ভূত? ভিতরে ভিতরে কন্গ্রেসের মন্দিরে এই-যে শক্তিপূজার বেদি গড়ে উঠছে তার কি স্পর্ধিত প্রমাণ এবারে পাই নি যখন মহাত্মাজিকে তাঁর ভক্তেরা। মুসোলীনি ও হিট্লারের সমকক্ষ বলে বিশ্বসমক্ষে অসম্মানিত করতে পারলেন? সত্যের যজ্ঞে যে কন্গ্রেসকে গড়ে তুলেছেন তপস্বী তার বিশুদ্ধতা কি তাঁরা রক্ষা করতে পারবেন— শক্তিপূজায় নরবলি-সংগ্রহের কাপালিক মুসোলীনি ও হিটার যাঁদের আদর্শ? আমি সর্বান্তঃকরণে শ্রদ্ধা করি জওহরলালকে; যেখানে ধন বা অন্ধ ধর্ম বা রাষ্ট্রপ্রভাব ব্যক্তিগত সংকীর্ণ সীমায় শক্তির ঔদ্ধত্য পুঞ্জীভূত করে তোলে সেখানে তার বিরুদ্ধে তাঁর অভিযান। আমি তাঁকে প্রশ্ন করি, কন্গ্রেসের দুর্গদ্বারের দ্বারীদের মনে কোথাও কি এই ব্যক্তিগত শক্তিমদের সাংঘাতিক লক্ষণ দেখা দিতে আরম্ভ করে নি? এতদিন পরে অন্তত আমার মনে সন্দেহ প্রবেশ করেছে। কিন্তু আমি পোলিটিশিয়ান নই, এই প্রসঙ্গে সে কথা কবুল করব।
এই উপলক্ষে একটা কথা বলা দরকার। গত কন্গ্রেস-অধিবেশনের ব্যবহারে বাঙালি জাতির প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করা হয়েছে, এই অভিযোেগ বাংলাদেশে ব্যাপ্ত। এই নালিশটাকে বিশ্বাস করে নেওয়ার মধ্যে দুর্বলতা আছে। চার দিকে সকলেই বিরুদ্ধ চক্রান্ত করছে, সর্বদা মনের মধ্যে এইরকম সংশয়কে আলোড়িত হতে দেওয়া মনোবিকারের লক্ষণ। দুর্ভাগ্যক্রমে দেশে মিলনকেন্দ্ররূপে কন্গ্রেসের প্রতিষ্ঠা হওয়া সত্ত্বেও