পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাৎপৰ্য্য । br" বিশুদ্ধ প্রেম পণ্য-চৰ্চার সামগ্ৰী নহে। উহাতে সাজসজ্জার কোনই প্রয়োজন নাই। যাহার অজ্ঞাতি-সারে, তুমি ! তাহাকে মনে মনে আত্মা উৎসর্গ করিয়াছ, যাহার নিকট তোমার মিছুই প্ৰাৰ্থনীয় নাই, কিন্তু যিনি তোমার ইহলোক ও পরলোকের একমাত্র প্রার্থনীয়, তাহার সম্মুখে আবার সাজসজজা কেন ? কি প্রলোভনে মা, আজ অকস্মাৎ তোমার এমন সুন্দর বেশ-ভূষায় বাসনা জন্মিল ? অমান নিৰ্ম্মল রত্বে আবার শিল্প-চাতুৰ্য্য কেন ? তুমি তোমার অন্তরের মহাৰ্য রত্নকে বাহ আবরণে সাজাও কেন ? উহা যে তোমার দেবী-হৃদয়ের একান্ত বিসদৃশ। সাজ-সজ্জায়, তোমার সেই ভস্মাবৃত-কায়, শ্মশান-চারী, উপাস্য-দেবতার কি প্রীতি হইবে ? উহাও যে তোমার হৃদয়ের পূর্বাপর-বিরোধী। তাই কবি দেখাইলেন যে, অহেতুক আত্মোৎসর্গে ভূষান্তরের প্রয়োজন নাই। সে নিজেই নিজের ভুষণ। অন্তরের পদাৰ্থ বাহিরে আনিতে নাই, উহাতে তাহার মহিমা খর্ব হয় । নিঃস্বাৰ্থ আত্ম-সমর্পণের সংসগে অন্যে ভূষিত হয়, তাহার নিজের বেশভুষা অনাবশ্যক। তীর্থোদকঞ্চ বহিশচ ন্যান্যতঃ শুদ্ধিমহঁতঃ’ ৷ যাহার প্ররোচনায় তোমার এই বুদ্ধি-মান্দ্য ঘটিয়াছে, তোমার নিজের হৃদয়কে তুমি নিজেই বিস্মৃত হইতে বসিয়াছ, সর্বাগ্রে তাঁহাকে—সেই মদনকে উন্মুলিত কর । তা’র পর, তোমার উপাস্য দেবতার সম্মুখীন হইও । ইহাই হইল মদন-ভস্মের তৃতীয় তাৎপৰ্য্য।