পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

УR\е কালিদাস । কৃতিতে প্ৰতিফলিত হইয়াছে। কোথায় ময়ুর কণ্ঠ উন্নত করিয়াছে, কোথায় নদীর নীল সলিলে শ্বেত সফর উদ্বাৰ্ত্তন করিতেছে, কোথায় কোন রাজপথে, রমণী-গণের কবরী হইতে কুসুম স্বলিত হইয়া পড়িয়া আছে, কোথায় কোন রমণী করাতালিকা দ্বারা ময়ুর নাচাইতেছে, আর তাহার করা-কিসলয়-স্থিত কাঞ্চন-বলয় রুণুরুণু করিয়া বাজিতেছে—এ সব এই প্রতিকৃতিতে চিত্রিত। কবির তীক্ষনয়ন এই বিস্তুত ভূভাগের সমস্ত পদার্থের উপর, ক্ষুদ্ৰাক্ষুদ্র-নির্বিশেষে—পতিত। তাই বলিতেছিলাম, কালিদাস মেঘদূতে, তাহার সৌন্দৰ্য্য-সৃষ্টি-নৈপুণ্য যে কীদৃশ অলৌকিক, তাহা প্ৰকৃষ্ট প্রমাণ করিয়াছেন। তবে, মেঘদূতে তিনি কোন আদর্শ গঠন করেন নাই, বা করিবার বাসনাও বোধ হয় তাহার মনে উদিত হয় নাই। মেঘদূতের নায়ক-নায়িকা ভোগাভূমির অধিবাসী, সুতরাং তাঁহাদের সমস্তই ভোগময়। তাহদের প্রতি-নিশ্বাসে, প্ৰতি-নয়ন-স্পন্দনে ভোগবাসনা ফুটিয়া বাহির হইতেছে। লালসার আবরণে তাহদের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ আবৃত। ভোগ-ভূমির ভোগী দম্পতির প্ৰণয় এবং বিচ্ছেদের সম্পূর্ণ চিত্র যে কতদূর সুন্দর হইতে পারে, তাহাই মাত্র তিনি দেখাইয়াছেন। নতুবা সমাজ-শিক্ষা বা লোক-শিক্ষার উপযোগী কোন আদর্শ চরিত্র মেঘদূতে নাই। রাম- , সীতা বা দুষ্যন্ত-শকুন্তলার আদর্শ চরিত্রে সমাজের বহুল উপকার সাধিত হয়, মেঘদূতের যক্ষ-যক্ষ-পত্নীর চরিত্রে সেরূপ কোন উচ্চ উদেশ্য সম্পন্ন হয় না ।