পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরূরবার উন্মাদ । 8 SDN) করিয়া, প্রিয়া-ভ্ৰমে, ধরিতে যাইতেছেন। ময়ুর-ময়ুরী, ভ্ৰমরভ্ৰমরী, হরিণ-হরিণী, করি-কারিণী-সব, স্থির-নয়নে, উন্মত্ত নরনাথের কাৰ্য্যাবলী অবলোকন করিতেছে। যেন সমস্ত বনস্থলী একটা বিষম বেদনায় ব্যথিত হইয়া, “অন্তঃস্তস্তিতবাষ্পবৃত্তি’ হইয়াছে। রাজার আজ অন্তর বাহির—সর্বত্রই উর্বশী। বিরহের এমন চিত্ৰ সংস্কৃত অন্য কোন নাটকে নাই বলিলেও, বোধ হয়, অত্যুক্তি হয় না। যখন উর্বশী লতারূপ-বিচ্যুত হইয়া রাজার সহিত মিলিত ‘হইলেন, এবং রাজাকে জিজ্ঞাসা করিলেন ‘মহারাজ ! তুমি কি ভাবে রাজধানীতে যাইতে চাও ?” তখন রাজা বলিলেন “চল উর্বর্বশি । যে মেঘে অচিরপ্রভার পতাকা পরিশোভিত, সুরম্য ইন্দ্ৰধনুর নয়ন-রঞ্জন আলেখ্যে যে মেঘ-গাত্র সুরঞ্জিত, সেই নবীন মেঘময় বিমানে আমাকে লইয়া চল । খেল-গমনে । তুমিত কতরূপ খেলা খেলিতে জান, আজ মেঘের খেলা খেল।” অনেক দুঃখ কষ্টের পর, অনেক উন্মাদের পর, দুই জনের আবার মিলন ঘটিয়াছে। আজ তাঁহাদের যে সুখ—যে উল্লাস উৎপন্ন, হইয়াছে, তাহা মৰ্ত্তের নহে। মৰ্ত্তে অত সুখ, অত উল্লাস জন্মে না, জন্মিলেও ক্ষণকাল বই থাকে না। উহা । স্বগের বস্তু। নিৰ্ম্মল সুখ, নিরাবিল উল্লাস স্বগের পদার্থ। আজ উর্বশী-পুরূরবার হৃদয়ে সেই স্বৰ্গ সম্পদ উদিত হইয়াছে। ধরায় ও সম্পদের স্থান নাই, ধরাতলের উষ্ণদাহে উহা ঝলসিয়া *স্থায়, তাই কবি, তাহাদিগকে উপর দিয়া—অনেক উপর দিয়া।