পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 O কালিদাস } লইয়া চলিলেন। তঁহারা আনন্দো— মোহে অবশ্য হইয়া,--- দুইজনে যেন এক হইয়া আকাশ-পথে চলিলেন, আর জড়জগৎ-পঙ্কিল সংসার তঁহাদের নীচে পড়িয়া রহিল। কবিকুলোত্তম কালিদাস, এই উর্বশীর-পুরূরবার মিলন, বিচ্ছেদ, পুনর্মিলন এবং পরিশেষে মেঘময়ী উর্বশীর আশ্রয়ে রাজার প্রস্থান, যেরূপ অনুপম-ভাবে বর্ণন করিয়াছেন, এই বর্ণনায় তঁহার স্বৰ্গমৰ্ত্ত-ব্যাপিনী কল্পনার যে অদ্ভূত লীলাতরঙ্গ * প্ৰদৰ্শন করিয়াছেন, তাহা ভাবিলেও চমৎকৃত হইতে হয়। হৃদয় বিমল আনন্দ-রসে আপ্নত হয়। রাজধানীতে প্ৰতিনিবিবৃত্তির পরে যখন তনয়-মুখ দর্শনান্তে রাজা বুঝিলেন যে,--না, উৰ্বশী আর থাকিবেন না, তাহার স্বাগ-প্ৰস্থানের কাল উপস্থিত। তখন তিনিও মন্ত্রিবগকে আহবান করিয়া বলিলেন “আমার পুত্র এই ঔর্বশেয় ‘আয়ুকে” আপনারা সিংহাসনে প্ৰতিষ্ঠিত করুন, আদ্যই ইহার অভিষেকোৎসব সম্পন্ন হউক। “ আমি বন গমন করিব।” রাজা বুঝিলেন যে, তাহার পক্ষে উর্বশী-শূন্য রাজ্য কেবল বিড়ম্বনাময়। পুরূরবার চরিত্রে একটি বিশেষ দ্রষ্টব্য এই যে, যখনই কোন ক্ষেত্ৰ উপস্থিত হইয়াছে, তখনই রাজা দেখাইয়াছেন, তিনি উর্বশীর জন্য সমস্ত ত্যাগ করিতে পারেন। রাজ্য, ঐশ্বৰ্য্য, ধন, মান, প্ৰাণ-উর্বশীর তুলনায় এ সমস্তই অতি তুচ্ছ। প্ৰণয়ের এ এক বিচিত্র অবস্থা। এ অবস্থা সকল প্ৰণয়ে ঘটে না। সকলের ভাগ্যে ঘটে না। প্রণয়ীর ।