এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতাভরণভূষিতা।।
দুর্য্যোধন কুলাঙ্গার হৈল জ্ঞাতিবৈরী। গৃহ ত্যাজে যার হেতু বনে বনচারী।। দুর্য্যোধন কর্ণ আর শকুনি দুর্ম্মতি। ধৃতরাষ্ট্র সেও দুষ্ট করিল অনীতি।। ধর্ম্মেরে না করে ভয় রাজ্যে লুব্ধ মন। পাপেতে নিমগ্ন হৈল দুষ্ট দুর্য্যোধন।। পুণ্যবলে নাহি দুষ্ট জীয়ে দেববলে।। কোন দেব বরদায়ী হৈন হেনকালে।। সে কারণে আজ্ঞা না করেন যুধিষ্ঠির। নতুবা গদার বাড়ি লোটাই শরীর।। কোন্ মন্ত্র মহৌষধি কৈল কোন্ জন। সে কারণে রহে দুষ্ট তোমার জীবন।। ধর্ম্ম-আত্মা যুধিষ্ঠিরে করে পাপাচার। সে কারণে আত দুঃখ আমা সবাকার।। কোন কর্ম্মে অশক্ত যে ইহ মোরা সব। তবু আজ্ঞা না করেন মারিতে কৌরব।। কহিতে কহিতে ক্রোধ হৈল বৃকোদরে। দুই চক্ষু লোহিত কচালে দুই করে।। পুনঃ ক্রোধ সম্বরিয়া দেখে ভ্রাতৃগণে। নিদ্রা ভঙ্গ না করেন বিচারিয়া মনে।। হেনকালে হিড়িম্ব নামেতে নিশাচর। বিপুল বিস্তার কায় লোকে ভয়ঙ্কর।। দন্তপাটি বিদাকাটি জিহ্বা লহ লহ। দীর্ঘকর্ণ রক্তবর্ণ চক্ষু কূপগৃহ।। কৃষ্ণ অঙ্গ অতি ব্যঙ্গ শিরা দীর্ঘতর। সেই কাএ ছিল ভাল মহীর উপর।। পেয়ে গন্ধ হ'য়ে অন্ধ চতুর্দ্দিকে চায়। চন্দ্রপ্রভা মুখশোভা জলরুহ প্রায়।। সুশোভন ছয় জন দেখি বটমূলে। হৃষ্টমতি স্বসা প্রতি নিশাচর বলে।। চিরদিন ভক্ষ্যহীন থাকি উপবাসে। দৈবযোগে দেখ আজি আইল মানুষে।। সুপ্রভাত অকস্মাৎ মাংস উপনীত। ছয় জনে মম স্থানে আনহ ত্বরিত।। নাহি ভয় নিজালয় যাও শীঘ্রগতি। মোর বন কোন্ জন বিরোধিবে সতী।। ভ্রাতীইকথা শুনি তথা চলিল রাক্ষসী। বীরবর বৃকোদর যথা আছে বসি।। মহাভরতের কথা অমৃত-সমান। কাশীরাম দাস কহে শুনে পূণ্যবান।। --------- পাণ্ডবের নিকট হিড়িম্বার আগমন। হিড়িম্ব রাক্ষস বধ। হিড়িম্বার বিবাহ ও ঘটোৎকচের জন্ম। ভীম হিড়িম্বাতে হয় কথোপকথন। দূরে থাকি হিড়িম্ব করয়ে নিরীক্ষণ।। বসিয়াছে হিড়িম্বা ভীমের বামদিকে। ভূবনমোহন রূপ বিদ্যুৎ ঝলকে।। কবরী বেড়িয়া দিব্য কুসুমের মালে। মানিক প্রবাল মুক্তা হার তার গলে।। বসন ভূষণ দিব্য নূপুর কঙ্কণ। স্বর্গবিদ্যাধরী মোহে নবীন যৌবন।। ভগিনীরে ডাক দিয়া বলয়ে হিড়িম্ব। এই হেতু এতক্ষণ তোমার বিলম্ব।। দিক্ তোর জীবনে কুলের কলঙ্কিনী। মনুষ্য স্বামীতে লোভ করিলি পাপিনী।। মম ক্রোধ তোমার হইল পাসরণ। মম ভক্ষ্য ব্যাঘাত করিলি সে কারণ।। এই হেতু অগ্রে তোরে করিব সংহার। পশ্চাতে এ সব জনে করিব আহার।। এত বলি যায় হিড়িম্বারে মারিবারে। নয়ন লোহিত দন্ত কড়মড় করে।। ভীম বলে রাক্ষস রে তোর লাজ নাই। ভগিনীরে পাঠাইলি পুরুষের ঠাঁই।। তুই পাঠাইলি তেঁই আইল হেথায়। মদনের বশ হৈয়া ভজিল আমায়।। কামপত্নী আমার হইল তোর স্বসা। মম বিদ্যমানে দুষ্ট বলিস দুর্ভাসা।। মারিবারে চাহিস, করিস অহঙ্কার। এইক্ষণে পাঠাইব যমের দুয়ার।। মাতা ভ্রাতা শুইয়া যে নিদ্রায় বিহ্বল। নিদ্রাভঙ্গ হইবেক না করিস গোল।।