পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোপালের ধ্যানঃ--পঞ্চবর্ষমতিদৃপ্তমঙ্গলে, ধাবমানমতিচঞ্চলেক্ষণং।

 পুনঃ সেই কন্যা জন্মে কাশীরাজালয়ে।
 সেই জন্মে পতিহীন যৌবন সময়ে।।
 না হইল বিবাহ যৌবন কাল গেল।
 আপনাকে তিরষ্কারি তপ আরম্ভিল।।
 হিমাদ্রি পর্ব্বতে তপ করয়ে অপার।
 দেখি ধর্ম্ম ইন্দ্র বায়ু অশ্বিনীকুমার।।
 তথায় আসিয়া এই দেব পঞ্চজন।
 জিজ্ঞাসিল কন্যা তপ কর কি কারণ।।
 তপ কর যদি স্বামী লাভের কারণে।
 যারে ইচ্ছা বর তুমি আমা পঞ্চজনে।।
 এত শুনি চাহে কন্যা পঞ্চজন পানে।
 সবার সমান রূপ দেখিল নয়নে।।
 কাহারে বরিব হেন বলিতে লাগিল।
 অধোমুখ হ'য়ে কন্যা নিঃশব্দ রহিল।।
 কন্যার হৃদয়-কথা জানি দেবগন।
 পাঁচজনে বর তারে দিল ততক্ষণ।।
 ত্যাজ তপ এই দেহ ত্যাজ কন্যা তুমি।
 আর জন্মে আমরা হইব তব স্বামী।।
 এত বলি অন্তর্হিত হৈল দেবগণ।
 তপস্যা করিয়া কন্যা ত্যাজিল জীবন।।
 সেই কন্যা তব গৃহে হইল দ্রৌপদী।
 অযোনিসম্ভবা জন্ম হৈল যজ্ঞভেদী।।
 ধর্ম্ম ইন্দ্র বায়ু অশ্বিনীর পাঁচজন।
 পঞ্চজন অংশে জন্ম পাণ্ডুর নন্দন।।
 পাণ্ডবের হেতু কৃষ্ণা ধাতার নির্ম্মাণ।
 পূর্ব্বের নিবন্ধ ইহা কে করিবে আন।।
 মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
 কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান্।।
        ------
   দ্রৌপদীর পূর্ব্বজন্ম বৃত্তান্ত।\
   অগস্ত্য বলেন সত্য অহিলেন ব্যাস।
 আমি যাহা জানি সুন কহি সে আভাস।।
 পূর্ব্বে এককালে যজ্ঞ করেন শমন।
 অহিংসাতে কোন প্রাণী না হয় মরণ।।
 মনুষ্যে পূরিল ক্ষিতি দেবে ভয় হৈল।
 সবে আসি ব্রম্ভারে সভয়ে নিবেদিল।।
 শুনি ব্রম্ভা চলিলেন সহ দেবগণ।
 নৈমিষ কাননে যজ্ঞ করেন শমন।।
 ব্রম্ভারে দেখিয়া যম উঠি সম্ভাষেণ।
 কি কর্ম্ম করহ বলি ধাতা জিজ্ঞাসেন।।
 সৃষ্টির উপরে আছে তব অধিকার।
 পাপ পুণ্য বুঝি দণ্ড দিবা সবাকার।।
 শুনিয়া কহেন যম করি যোড়পাণি।
 মম শক্তি এ কর্ম্ম নহিল পদ্মযোনি।।
 সব দেবগণমধ্যে আমি হৈনু চোর।
 ত্রিভুবন উপরে বিষয় দিলা মোর।।
 ত্রৈলোক্যের রাজা হৈল দেব পুরন্দর।
 তিনি যজ্ঞ করিতে পায়েন অবসর।।
 কুবের বরুন যজ্ঞ ইচ্ছা কৈলে করে।
 অবকাশ মুহুর্ত্তেক নাহিক আমারে।।
 না পারিনু এ কর্ম্ম করিতে দেবরাজ।
 অন্য কোন জনেরে সমর্প এই কাজ।।
 না পাইনু পাপ পুণ্য কর্ম্মের নির্ণয়।
 কার কতকাল আয়ু নির্ণয় না হয়।।
 যমের বচনে সুচিন্তিত প্রজাপতি।
 সেইকালে কায় হৈতে হইল উৎপত্তি।।
 লেখনী দক্ষিন করে তালপত্র বামে।
 জাতিতে কায়স্থ হৈল চিত্রগুপ্ত নামে।।
 যমেরে বলেন তুমি সঙ্গে রাখ এরে।
 যখন যে জিজ্ঞাসিবে কহিবে তোমারে।।
 যাহার যে কর্ম্ম তুমি জানিতে পারিবে।
 ব্যাধিরূপ হৈয়া তারে বিনাশ করিবে।।
 আপনার কর্ম্মভোগ ভুঞ্জিবে সংসার।
 তথাপি উপরে তব এই অধিকার।।
 ব্রম্ভার বচনে যম প্রবোধ পাইয়া।
 সঞ্জিবনীপুরে যান যজ্ঞ সমাপিয়া।।
 যমে প্রবোধিয়া সবে যথাস্থানে চলে।
 যাইতে কনক-পদ্ম দেখে গঙ্গাজলে।।
 সহস্র সহস্র পুষ্প ভাসি যায় স্রোতে।
 দেখিয়া বিস্ময় হৈল সবাকার চিতে।।
 অম্লান কমল পুষ্প গন্ধে মন মোহে।
 তদন্ত জানিতে ইন্দ্র পবনেরে কহে।।