পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধ্বানন্তরিং সর্ব্বপাপগ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরং।। কিন্তু কহি তাহে এক দ্বিজবর আছে। বুঝিয়া খাইবে বাপু দ্বিজে খাও পাছে।। অবধ্য ব্রাম্ভণ জাতি কহিনু তোমারে। ক্ষুধায় আকুল বাছা খাও পাছে তারে।। অগ্নি সূর্য্য বিষ হ'তে আছে প্রতিকার। ব্রাম্ভণ-কোপেতে বাছা নাহিক নিস্তার।। গরুড় বলিল যদি তাদ্দৃশ ব্রাম্ভণ। কোন চিহ্ন ধরে দ্বিজ কেমন বরণ।। বিনতা বলিল তুমি ক্ষুধায় আকুল। চিনিয়া খাইতে দুঃখ পাইবে বহুল।। খাইতে তোমার কষ্ট জন্মিবে যখন। নিশ্চয় জানিবে পুত্র সেই সে ব্রাম্ভণ।। এত বলি বিনতা করিল আশীর্ব্বাদ। যাও পুত্র অমৃত আনহ অপ্রমাদ।। ইন্দ্র যম আদিত্য কুবের হুতাশণ। তোমারে জিনিতে শক্ত নহে কোনজন।। এত শুনি খগবর করিল মেলানি। মায়ে প্রণমিয়া বীর উড়িল তখনি।। গরুড় উড়িতে তিন ভূবন কাঁপিল। প্রলয়ের প্রায় যেন সিন্ধু উথলিল।। পাখসাটে পর্ব্বত উড়িয়া যায় দূরে। গর্জ্জনে লাগিল তালা সুরাসুর নরে।। কৈবর্তের দেশ দেখি মুখ বিস্তারিল। নিশ্বাস সহিত সবে মুখে প্রবেশিল।। আছিল ব্রাম্ভন এক তাহার ভিতরে। অগ্নির সমান জ্বলে গরুড় উদরে।। গরুড় স্মরিল তবে মায়ের বচন। ডাকিয়া বলিল শীঘ্র নিঃসর ব্রাম্ভণ।। ব্রাম্ভণ বলিল নিঃসরিব কি প্রকারে। মোর ভার্জ্যা পুড়ে মরে তোমার উদরে।। কৈবর্ত্তিনী ভার্জ্যা মোর প্রাণের সমান। ভার্য্যা বিনা আমি না রাখিব প্রাণ।। গরুড় বলিল দ্বিজ মোর বধ্য নহে। ব্রাম্ভণ পরম ধন সর্ব্বত্র কহে।। ধরিয়া ভার্য্যার হাত আইস বাহিরে। এত শুনি দ্বিজ ধরে কৈবর্ত্তিনী-করে।। লইয়া আপন ভার্য্যা হইল বাহির। অন্তরীক্ষে উড়িল গরুড় মহাবীর।। হেনকালে গরুড়ে কশ্যপ দেখিল। আশীর্ব্বাদ করিয়া কুশল জিজ্ঞাসিল।। গরুড় বলিল পিতা আছি যে কুশলে। সকল কুশল মাত্র ভক্ষ্য নাহি মিলে।। মায়ের বচনে খাইলাম নিশাচর। না হইল ক্ষুধা শান্তি পুড়িছে উদর।। বিমাতার বাক্যে যাই অমৃত আনিতে। ক্ষুধায় অবশ তনু জ্বলি উদরেতে।। তুমি আর কিছু মোরে দেহ খাইবারে। ভাল করে দেহ যেন উদর যেন পুরে।। কশ্যপ বলেন তবে শুন খগেশ্বর। দেব নরে বিখ্যাত আছয়ে সরবর।। গজ-কূর্ম্ম দুইজনে তথা যুদ্ধ করে। তাহার বৃত্তান্ত শুন আমার গোচরে।। বিভাবসু সুপ্রতীক দুই সহোদর। মহাধনে ধনী তারা মুনির কোঙর।। শত্রুগণ দোঁহারে করিল ভেদাভেদ। ধনের কারণে দোঁহে হইল বিচ্ছেদ।। সুপ্রতীক কনিষ্ঠ সে পৃথক হইল। আপনার সমুচিত বিভাগ মাগিল।। শত্রুগণে বলিল অনেক ধন আছে। আপন উচিত ধন ছাড়ি দেহ পাছে।। বিভাবসু জ্যেষ্ঠ কহে এভাগ উহার। অকারণ দ্বন্দ করে সহিত আমার।। দোঁহা কারে এইমত কহে শত্রুজনে। বহুদিন এইমত দ্বন্দ্ব দুইজনে।। নিত্য আসে সুপ্রতীক ভ্রাতে মাগে ধন। ক্রোধে বিভাবসু শাপ দিল ততক্ষণ।। যে কিছু তোমার ভাগ তাহা দিনু আমি। নিত্য আসি জঞ্জাল করহ মোর সনে। দিনু শাপ গজ হ'য়ে থাক গিয়া বনে।। সুপ্রতীক বলে মোর ভাগ নাহি দিয়া। শাপ দাও বল মোরে কিসের লাগিয়া।।