এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
নারায়ণঃ সরসিজাসন-সন্নিবিষ্টঃ।
সুধার কারণে আসে বিনতানন্দন। অবশ্য লইবে সুধা জিনি দেবগণ।। এত শুনি কুপিত হইল পুরন্দর। ততক্ষণে আজ্ঞা দিল যত অনুচর।। পাইয়া ইন্দ্রের আজ্ঞা যত দেবগণ। সুসজ্জ হইল সবে করিবারে রণ।। মুনিগণ বলে শুন সূর্য্যের নন্দন। ইন্দ্রের হইল পাপ কিসের কারণ।। কামরূপী পক্ষী সেই মহাবলধর। কি হেতু হইল কহ করিয়া বিস্তার।। সৌতি বলে সেই কথা কহিতে বিস্তার। সংক্ষেপে কহিব কিছু শুন সারোদ্ধার।। ইন্দ্রের প্রতি বালখিল্য মুনির শাপ তপ করে পর্ব্বতে কশ্যপ মুনিবর। ইন্দ্র আদি দেবতার যত অনুচর।। যজ্ঞকাষ্ঠ আনিবারে গেল মুনিগণ। ইন্দ্র যম সূর্য্য বায়ু আদি যত জন।। ভাঙ্গিয়া লইল কাষ্ঠ মাথার উপর। পর্ব্বত সমান বোঝা নিল পুরন্দর।। শীঘ্রগতি কাষ্ঠ ফেলি আসিল তখনি। দেখিতে দেখিতে যত বালখিল্য মুনি।। পলাশের পত্র সবে লইয়া মাথায়। অঙ্গুষ্ঠপ্রমাণ সবে ধীরে ধীরে যায়।। কত দূরে গিয়া সবে গোক্ষুরে দেখিয়া। পার হৈতে নাহি পারে রহে দণ্ডাইয়া।। তাহা দেখি হাসিতে লাগিল দেবরাজ। দেখিয়া করিল ক্রোধ মুনির সমাজ।। উপহাস করিলি করিয়া অহঙ্কার। ব্রাম্ভণেরে নাহি চিন দুষ্ট দুরাচার।। বালখিল্য মুনিগণ এতেক ভাবিল। আবার ইন্দ্র করিবারে যজ্ঞ আরম্ভিল।। ইন্দ্র হ'তে শতগুণ বলিষ্ঠ হইবে। কামরূপী মহাকাল ত্রৈলোক্যে জিনিবে।। এই হেতু যজ্ঞ করে মহামুনিগণ। শুনিয়া কশ্যপে ইন্দ্র করে নিবাদন।। শীঘ্রগতি গেল তেঁই যজ্ঞের সদন। মুনিগণ প্রতি তবে বলিল বচন।। দেবরাজ পুরন্দর ব্রম্ভারে সেবিল। দেবের ঈশ্বর করি ব্রম্ভা নিয়োজিল।। অন্য ইন্দ্র হেতু যজ্ঞ কর কি কারণ। ব্রম্ভার বচন চাহ করিতে লঙ্ঘন।। ব্রম্ভার বচন রাখ হও সবে প্রীত। আজ্ঞা কর মুনিগণ যে হয় উচিত।। বালখিল্য বলে যজ্ঞে পাই বহু কষ্ট। রাখিতে তোমার বাক্য সব হইল নষ্ট।। কশ্যপ বলেন ভ্রষ্ট হবে কি কারণ। হউক পক্ষীন্দ্র যে জিনিবে ত্রিভূবন।। মুনিগণে সম্বোধিয়া বলে পুরন্দরে। আর উপহাস নাহি কর ব্রাম্ভণেরে।। ব্রাম্ভণেরে না দেখিয়া কর' অহঙ্কার। ব্রাম্ভণের ক্রোধে কার' নাহিক নিস্তার।। এত শুনি দেবরাজ করিল মেলানি। বিনতারে বলেন কশ্যপ মহামুনি।। সফল করিলা ব্রত শুন গুণবতী। তোমার গর্ভেতে হবে খগেন্দ্র উৎপত্তি।। এত শুনি বিনতার আনন্দ বিস্তর। হেনমতে পক্ষী হইল খগেন্দ্র কোঙর।। তবে ত গরুড় পক্ষী গেল সুরালয়। ভয়ঙ্কর মুর্ত্তি দেখি সবে করে ভয়।। যে দেবের হাতে ছিল যেই প্রহরণ। চতুর্দ্দিক হ'তে সবে করে বরিষণ।। শেল শূল জাঠা শক্তি ভূষণ্ডি তোমর। পরিঘ পরশু চক্র মুষল মুদগর।। প্রলয়ের মেঘ যেন করে বরিষণ। ঝাঁকে ঝাঁকে অস্ত্রবৃষ্টি করে দেবগণ। কামরূপী পক্ষিরাজ নির্ভয় শরীর।। দেবের চরিত্র দেখে হাসে মহাবীর।। জ্বলন্ত অনল যেন ঘৃত দিলে বাড়ে। যত অস্ত্র মারে তত তার তেজ বাড়ে।। জিনিয়া মেঘের শব্দ গরুড় গর্জ্জন। দেবের চরিত্র দেখি ভাবে মনে মন।।