এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রার্থনা মন্ত্র--পাপহহং পাপকর্ম্মহং পাপাত্মা পাপসম্ভবঃ
পথে যেতে ইন্দ্র জিজ্ঞাসেন ক্ষণে ক্ষণ। এখন' সুদৃঢ় করি বলহ বচন।। যথায় রাখিবা সুধা যবে লব আমি। মোর সহ দ্বন্দ্ব পাছে পুনঃ কর তুমি।। হাসিয়া গরুড় ইন্দ্রে করিল নির্ভয়। তথাপি ইন্দ্রের চিত্তে না হয় প্রত্যয়।। তথা হৈতে চলে বীর তারা যেন খসে। নাগলোকে গেল বীর চক্ষুর নিমেষে।। ডাক দিয়া আনিল যতেক নাগগণ। হের সুধা আনিলাম দেখ সর্ব্বজন।। আমার মাতার কর দাসীত্ব মোচন। এত শুনি সব ফণী আনন্দিত মন।। ফণিগণ বলিলেক নাহি আর দায়। দাসীত্বে মোচন করিলাম তব মায়।। এত শুনি হৃষ্টমতি বিনতানন্দন। নাগগণে ডাকি তবে বলিল বচন।। স্নান করি এস শুচি হয়ে সর্ব্বজন। আনন্দিত হইয়া সুধা করহ ভক্ষণ।। এই সুধা রাখি দেখ কুশের উপর। এত বলি সুধা থুয়ে গেল খগেশ্বর।। গরুড়ের বাক্যে সবে করে স্নানদান। হেথা সুধা ল'য়ে ইন্দ্র হৈল অন্তর্ধান।। শুচি হৈয়া আইলেক যতেক নাগগণ। সুধা না দেখিয়া হৈল বিরস বদন।। জানিল হরিয়া সুধা দেবরাজ নিল। সবে মেলি সাই কুশ চাটিতে লাগিল।। তীক্ষ্ণধারে সবার জিহ্বাতে হৈল চির। সেই হৈতে দুই জিহ্বা হইল ফণীর।। পবিত্র হৈল কুশ সুধার পরশনে। সকল নিষ্ফল কর্ম্ম কুশের বিহনে।।
নাগরাজের তপস্যা সনকাদি মুনি বলে সূতের নন্দন। শুনিনু গরুড়-কথা অদ্ভুত কথন।। কদ্রুর হইল এক সহস্র কুমার। কোন্ কর্ম্ম কৈল কিবা নাম সবাকার।। সৌতি বলে কতেক কহিব মুনিগণ। কিছু নাম কহি শ্রেষ্ঠ ফণী যতজন।। শেষ জ্যেষ্ঠ সহোদর দ্বিতীয় বাসুকী।। ঐরাবত তক্ষক কর্কট পিঙ্গলাক্ষী।। বামন কালিয় হৈল পূর্ণ ধনঞ্জয়। প্রাক্ষ অনীল নীল পনস অজয়।। আসিবর্ণ খড়গচূড় আর্জ্জক উগ্রক। স্বার্থক গোলক রুদ্র বিমন বিতক।। নাহুষ নির্দ্ধর ধৃতরাষ্ট্র অতিশ্রম। হেনমত নাগ সব মহাপরাক্রম।। সর্ব্ব হৈতে জ্যেষ্ঠ হয় শেষ বিষধর। জিতেন্দ্রিয় সুপণ্ডিত ধর্ম্মেতে তৎপর।। দুরাচার ভাই সব দেখি নাগরাজ। বিশেষ মায়ের শাপ ভাবি হৃদি মাঝ।। সকল ত্যাজিয়া গেল তপ করিবারে। নানা তীর্থ করি শেষ ভ্রময়ে সংসারে।। হিমালয়ে আশ্রম করিল নাগবর। অত্যন্ত কঠোর তপ করে নিরন্তর।। তার তপ দেখি তুষ্ট হৈল প্রজাপতি। ব্রম্ভা বলে তপ কেন কর ফণিপতি।। স্ববাঞ্ছিত বর মাগি করহ গ্রহণ। করযোড়ে শেষ তবে কৈল নিবেদন।। আমি কি কহিব আর তোমার গোচর। দুষ্ট দুরাচার মোর সব সহোদর।। গরুড় আমার ভাই বিনতানন্দন। তার সহ কোন্দল করয়ে অনুক্ষণ।। বলেতে সমর্থ কেহ নহে সম তার। নিষেধ শুনে না কেহ করে অহঙ্কার।। সদাই কপট কর্ম্ম লোকের হিংসন। অহঙ্কারী কুপথী যতেক ভাতৃগণ।। সেই হেতু সকলের সংসর্গ ছাড়িয়া। শরীর ত্যাজিব আমি তপস্যা করিয়া।। পুনঃ যেন সংসর্গ না হয় সবা সনে। মরিব তপস্যা করি তাহার কারণে।।