এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ধ্যেয়ং সদা পরিভবঘ্নমভীষ্ট দোহং।
তথা হৈতে চলি গেল পৌষ্য নৃপবর। মাগিল কুণ্ডল যুগ্ম ভূপতি-গোচর।। নৃপ পাঠাইল দ্বিজে রাণীর সদনে। কর্ণ হৈতে কুণ্ডল দিলেন ততক্ষণে।। কর্ণ হৈতে কুণ্ডল কাটিয়া দিল রাণী। পাইল কুণ্ডল, চলি গেল দিজমণি।। যেইক্ষণে দ্বিজবর হাতে কুণ্ডল পাইল। সেইক্ষণে তক্ষক তাহার সঙ্গ নিল।। পরশ করিতে দ্বিজে না হয় শকতি। পাছে পাছে ধায় ধরি সন্ন্যাসী মুরতি।। কত পথে উতঙ্ক দেখিয়া সরোবর। স্নান হেতু নামে বস্ত্রে থুইয়া উপর।। বসন ভিতরে দ্বিজ কুণ্ডল থুইল। ছিদ্র পেয়ে তক্ষক কুণ্ডল হরি নিল।। উতঙ্ক দেখয়ে থাকি জলের ভিতর। সন্ন্যাসী কুণ্ডল লৈয়া পশিল বিবরে।। উপায় না দেখিয়া মুনি বিষাদিত মন। নখেতে বিবর দ্বার করিল খনন।। এ সকল বৃত্তান্ত জানিল পুরন্দর। ব্রাম্ভণের দুঃখে দুঃখী হইল অনন্তর।। সেই দণ্ডে নিজ বজ্র কৈল নিয়োজন। বিবরের দ্বার মুক্ত হৈল ততক্ষণ।। পাতালে উতঙ্ক গিয়া প্রবেশ করিল। ভ্রমিল অনেক স্থান অনেক দেখিল।। চন্দ্র সূর্য্য গতায়ত গ্রহ তারাগণ। মাস বর্ষ ষড়ঋতু সবার সদন।। অনেক ভ্রমিল দ্বিজ পাতাল ভিতরে। না দেখিল সন্ন্যাসীরে গেল কোথাকারে।। হেনকালে অশ্বরূপে বলে বৈশ্যানর। হে উতঙ্ক ব্রাম্ভণ, আমার বাক্য ধর।। গুরুজ্ঞানে মোরে তুমি করহ বিশ্বাস। শ্রেয় হবে মোর গুহ্যে করহ বাতাস।। গুরুনাম শুনি দ্বিজ বিলম্ব না কৈল। না কিছু পাইয়া মুখে গুহ্যে ফুক দিল।। গুহ্যে ফুক দিতে ধুম বাহিরায় মুখে। ধূম-ময় সকল করিল নাগলোকে।। প্রলয়ের প্রায় হৈল ঘোর অন্ধকার। বিস্মিত হইয়া নাগ করিল বিচার।। বাসুকি প্রভৃতি যত শ্রেষ্ঠ নাগগণ। কি হেতু হইল ধূম জিজ্ঞাসে কারণ।। চরমুখে বৃত্তান্ত পাইল ততক্ষণ। তক্ষকে আনিয়া বহু করিল গর্জ্জন।। দেহ শীঘ্র কুণ্ডল ব্রাম্ভণ হোক সুখী। এত বলি দ্বিজে তুষ্ট করিল বাসুকি।। কুণ্ডল পাইয়া দ্বিজ গেল অশ্বস্থানে। পৃষ্ঠে করি অশ্ব লৈয়া থুইল ব্রাম্ভণে।। সপ্তদিন পূর্ণে আসি গুরুর গৃহেতে। দেখে গুরুপত্নী ক্রোধে আছে জল-হাতে।। মুখেতে নির্গত হৈতে ছিল বজ্রবাণী। হেনকালে উতঙ্ক দিলেন যুগ্মমণি।। কুণ্ডল পাইয়া হৃষ্ট ব্রাম্ভণী হইল। উতঙ্ক সকল কথা গুরুকে কহিল।। গুরু প্রদক্ষিণ করি করিল গমন। যথা রাজা জন্মেজয় চলিল ব্রাম্ভণ।। ব্রাম্ভণ দেখিয়া রাজা করিল বন্দন। জিজ্ঞাসিল মুনিবরে কেন আগমন।। দ্বিজ বলে নৃপতি করহ কোন কর্ম্ম। পিতৃবৈরী না মারিলে নহে পুত্রধর্ম্ম।। চণ্ডাল তক্ষক নাগ বড় দুরাচার। দংশিল তোমার বাপে বিখ্যাত সংসার।। তাহার উচিত রাজা করিতে যুয়ায়। সর্পকুল বিনাশিতে করহ উপায়।। উতঙ্ক-বচন শুনি রাজা জন্মেজয়। মন্ত্রীগণে জিজ্ঞাসিল মানিয়া বিস্ময়।। কহ সত্য মন্ত্রীগণ ইহার কারণ। তক্ষক দংশনে হৈল পিতার মরণ।। ব্রম্ভশাপে মরিলেন পিতা হেন জানি। তাক্ষক এমন কৈল কভু নাহি শুনি।। রাজার এমত বাক্য শুনি মন্তীগণ। কহিতে লাগিল তবে কথা পুরাতন।। মহাভারতের কথা অমৃত সমান। কাশীদাস কহে সাধু সদা করে পান।।