এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রণাম মন্ত্র--নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয় হেতবে।
মহাপরাক্রমী রাজা রূপগুণবন্ত। পৃথিবীতে একচ্ছত্র করিল দুষ্মন্ত।। মৃগয়াতে বড় রত মহাধনুর্ধর। মৃগয়া করিতে গেল বনের ভিতর।। হস্তী হয় পদাতিক না যায় গণন। সসৈন্যে বেড়িল রাজা এক মহাবন।। সিংহ ব্যাগ্র ভল্লুক বরাহ মৃগগণ। অনেক মারিল রাজা না যায় গণন।। যতেক রাজার সৈন্য মারি মৃগচয়। শকটে পুরিল কেহ স্কন্ধে করে লয়।। কোন কোন জন তথা খায় পোড়াইয়া। আর এক বনে গেল সে বন ছাড়িয়া।। হিরণ্য নামেতে বন অতি মনোরোম। চিত্রবন সমান সে মুনির আশ্রম।। নানাজাতি বৃক্ষ তথা ফুল ফল ধরে। নানাজাতি পক্ষী তথা কলরব করে।। মধুচক্র ডালে ডালে আছে তরুগণে। বায়ুতেজে পুষ্পবৃষ্টি হউ অনুক্ষ্ণে।। নানা পক্ষিগণ তথা সদা ক্রীড়া করে। পক্ষীকে না করে ভক্ষ মুনিরাজ ডরে।। মুনির আশ্রম বুঝি দুষ্মন্ত নৃপতি। ডাকিয়া বলেন রাজা সৈন্যগণ প্রতি।। অগ্নিহোত্র ধূম গিয়া পরশে গগন। ব্রম্ভার বদনে যেন মন্ত্র-উচ্চারণ।। মুনি সম্ভাষি আমি না আসি যতক্ষণ। এইখানে তাবৎ থাকহ সর্ব্বজন।। এতবলি নরপতি পুরোহিত লৈয়া। কণ্বের আশ্রমে তবে প্রবেশিল গিয়া।। প্রবেশ করিল গিয়া মুনি অন্তঃপুরে। দেখিল যে কণ্ব নাই চিন্তে নৃপবরে।। হেনকালে শকুন্তলা মুনির নন্দিনী। পাদ্য অর্ঘ দিয়া তুষ্ট কৈল নৃপমণি।। দেখিয়া কন্যার রূপ ভূপতি মোহিত। জিজ্ঞাসিল কন্যা প্রতি কামে হতচিত।। দুষ্মন্ত ভূপতি আমি শুন সুবদনি। হেথা আইলাম ভেটিবারে মুনি।। কোথায় গেলেন তিনি কহত' সুন্দরী। তুমি বা কাহার কন্যা কহ সত্য করি।। কন্যা বলে পিতা গেল ফলের কারণ। মুহূর্ত্তেকে রহ হেথ আসিবে এখন।। মুনির নন্দিনী আমি শুন নরবর। এতশুনি নরপতি করিল উত্তর।। তোমার সদৃশ রূপ কোথাও না দেখি। মুনি কন্যা সত্য তুমি কহ শশিমুখি।। পরম তপস্বী মুনি ফল্মূলাহারী। দারাত্যাগী জিতেন্দ্রিয় যতী ব্রম্ভচারী।। তাঁহার তনয়া তুমি হইলে কি মতে। কাহ সত্য সুবদনি আমার সাক্ষাতে।। কন্যা বলে শুন মম জন্মের কাহিনী। যেমতে আমি হইনু মুনির নন্দিনী।। বিশ্বামিত্র মুনি জান বিখ্যাত সংসারে। চিরদিন তপস্যা করেন অনাহারে।। তাঁর তপ দেখি কম্পবান পুরন্দর। আমার ইন্দ্রত্ব লবে এই মুনিবর।। সর্ব্ব দেবগণ মিলি ভাবে নিরন্তর। মেনকারে ডাকি বলে দেব পুরন্দর।। রূপে গুণে তব তুল্য নাহি ত্রিভুবনে। মম কার্য্য সিদ্ধ কর আপন্র গুণে।। শুনিয়া মেনকা অতি বিষন্ন-বদন। যোড়হাত করি ইন্দ্রে করে নিবেদন।। সংসারে বিখ্যাত বিশ্বামিত্র মহাঋষি। মহাতেজা ক্রোধী সেই পরম তপস্বী।। বশিষ্ঠের শতপুত্র প্রকারে মারিল। ক্ষত্রক্ষেত্রে জন্মি তবু ব্রাম্ভণ হইল।। কৌশিকী নামেতে নদী আজ্ঞাতে সৃজিল। সহজাঙ্গে ব্যাধি করি পুনঃ মুক্ত কৈল।। দ্বিতীয় করিল সৃষ্টি বিখ্যাত জগতে। আপনি করহ ভয় হাঁহার তপেতে।। তাঁর তপ নষ্ট করে হেন কোনজন। কর্ম্ম না হইবে হবে আমার মরণ।। অগ্নি-সূর্য্যতেজ যাঁর যুগল নয়নে। তাঁহার তপস্যা ভঙ্গ করে কোন জনে।।